যশোরে মাদক মামলায় নারীসহ দুই জনের শর্তসাপেক্ষে মুক্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে আলাদা মাদক মামলায় দুই আসামিকে কারাদন্ডভোগের পরিবর্তে কয়েক শর্তে ২ বছর প্রবেশনে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন বিচারক। গত বুধবার যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ আদালতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস ব্যতিক্রমধর্মী এই রায় প্রদান করেন। রায়ে আসামিদেরকে বাড়িতে অবস্থান এবং সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থাকতে বলা হয়েছে। আসামিরা হলেন, চৌগাছা উপজেলার মশিউরনগর পশ্চিমপাড়া গ্রামের জামাত আলীর ছেলে সবুজ ও শার্শা উপজেলার বড়আঁচড়া রেলগেট এলাকার মৃত বাবর আলীর স্ত্রী শাহারুন নেছা।
আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর অভিযুক্তরা গরহাজির থাকেননি। এ মামলা ছাড়া তাদের আর কোনো মামলা নেই। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমাণিত হয়। আসামিদের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুনর্বাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৬টি শর্ত দিয়ে আসামি শাহারুন নেছাকে মুক্তির আদেশ প্রদান করেন বিচারক। শর্তগুলি হলো, সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোনো প্রকার অপরাধের সাথে জড়িত থাকতে পারবেন না। শান্তি বজায় রেখে সকলের সাথে সদাচারণ করতে হবে। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যে কোনো সময় তলব করলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে। কোনো প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সাথে মেলামেশা করা যাবে না। একই সাথে আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধায়নে থেকে সার্বিক অবস্থা অবহিত করতে হবে। প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না। উল্লেখ্য, আসামি শাহারুন নেছা ২০১০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর নিজ এলাকা থেকে পুলিশের হাতে ১৪ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক হন। এঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। অপর আসামি সবুজকে উল্লিখিত ৬ শর্তের সাথে আরও দুটি শর্ত দেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো প্রবেশনকালীন মহান মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাতটি পুর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখতে হবে। তা হলো, রক্তাক্ত বাংলা, অরুণ্যেদয়ের অগ্নি সাক্ষী, শ্যামল ছায়া, একাত্তরের যীশু ও হুলিয়া। এবং প্রবেশনকালীন পাঁচটি ফলজ ও দুটি বনজ গাছ রোপন করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সবুজকে নিজ বাড়ি থেকে ১০ বোতল ফেনসিডিলসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় মামলা করা হয়।