বিদিশা-এরিক ঘিরে জাপায় নতুন বিতর্ক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মারা গেছেন দুই বছর হতে চলল। কিন্তু বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না দলটির। নতুন বিতর্ক এখন এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক ও সন্তান এরিককে ঘিরে। ২০১৪ সাল থেকে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে জাপা। এরশাদ জমানায় (বেঁচে থাকা পর্যন্ত) তাকে এবং জাপাকে ঘিরে নানা নাটকীয়তা দেখেছে দেশবাসী। জাপা ভেঙে কয়েক ভাগ হয়েছে। সম্পর্ক করে বিয়ে করা স্ত্রী বিদিশার সঙ্গে ছাড়াছাড়ির দেড় দশক পেরিয়ে গেলেও এখনো আলোচনা-সমালোচনা চলছেই। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাপার অংশগ্রহণ করা না করা নিয়ে এরশাদ এবং জাপার নাটকীয়তা হাস্যরসে রূপ নেয়। সকালে এক কথা, বিকেলে আরেক কথা বলা নিয়েও মানুষের মধ্যে হাসাহাসি হয়েছে। ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের ফলাফলে এরশাদ বসেন বিরোধীদলীয় নেতার আসনে। তিনি বেঁচে থাকতেই নিজ গৃহেই (এরশাদ-রওশন-জিএম কাদের) দলের নেতৃত্ব নিয়ে টানাটানি ছিল প্রকাশ্য। এরশাদ মারা যাওয়ার পর জাপার নেতৃত্বে আছেন তারই ছোট ভাই জিএম কাদের। কিন্তু নাটকীয়তা বন্ধ হয়নি।
এরশাদ মারা যাওয়ার পরপরই পার্টির চেয়ারম্যান পদ ও সংসদে বিরোধী দলের নেতা হওয়া নিয়ে দেবর-ভাবীর (জিএম কাদের-রওশন) টানাটানি গড়িয়েছিল অনেক দূর। রংপুরে এরশাদ-রওশনপুত্র শাদকে এমপির পদ ছাড় এবং রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতার আসন দিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদ নিষ্কণ্টক করেন জিএম কাদের। পার্টিতে রওশন এখন প্রধান উপদেষ্টা। তবে জিএম কাদেরই পার্টির সব কিছু সামলাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙাকে সরিয়ে সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলুকে পুনর্বহাল করেছেন। দেবর-ভাবীর মধ্যে প্রকাশ্য গ্রুপিং এখন আর দেখা যায় না। রওশন অনুসারীদেরও আর আগের মতো প্রকাশ্যে জিএম কাদেরের বিরোধিতা করতে দেখা যায় না। এটাকে জিএম কাদেরের পলিসির সফলতা হিসেবেই দেখেন নেতাকর্মীরা।
পার্টিতে জিএম কাদেরের একক নেতৃত্ব যখন প্রতিষ্ঠিত ঠিক তখনই নতুন বিতর্ক সামনে এসেছে এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিককে নিয়ে। জাপার নেতৃত্ব নিয়ে তার বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্যে জিএম কাদের তো বটেই নেতাকর্মীরাও অস্বস্তিতে পড়েছেন। বিদিশা এক সময় জাপার প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ১৯৯৮ সালে একে-অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন এরশাদ ও বিদিশা। তাদের ঘরে একমাত্র সন্তান এরিক এরশাদ। ২০০৫ সালে এরশাদ-বিদিশার ছাড়াছাড়ি হয়। মোবাইল চুরির একটি মামলায় জেলও খেটেছেন বিদিশা। পার্টির প্রেসিডিয়ামের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। এরপর থেকেই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। ব্যস্ত ছিলেন ব্যবসা ও সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ মৃত্যুবরণ করেন। মারা যাওয়ার আগমুহূর্তে তিনি নিজ নামে গড়েছেন এরশাদ কল্যাণ ট্রাস্ট। যে ট্রাস্টের অধীনে দেয়া হয় এরশাদের বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাড়িসহ কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।