আইনমন্ত্রী ও দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি বিএনপির

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ একটি ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পদত্যাগ দাবি করেছে। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি এই কর্তৃত্ববাদী অবৈধ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের টেলিফোন কনভারসেশন (কথোপকথন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। ওই ফোনালাপে এই সরকারের দুর্নীতির একটি প্রকৃতচিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। মন্ত্রী ও উপদেষ্টার বক্তব্যের মাধ্যমে তা প্রমাণ হয়েছে। তাই জাতির কাছে বিষয়টি আজ এটি একটি প্রমাণিত সত্যের দলিল। আলোচ্য ফোনালাপে সংশিষ্ট দুই নেতাকে তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে শোনা গেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেখানে বলতে শোনা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি প্রজেক্ট নিয়ে জানতে চেয়েছেন সালমান এফ রহমান। জবাবে তা পাস করে দিয়েছেন বলে জানান আইনমন্ত্রী। বিষয়টি টেন্ডারে হবে কি না তাও জানতে চান উপদেষ্টা। তার মতে, এটা জয়ের প্রজেক্ট। এটা টেন্ডার ছাড়াই হতে পারে বলে তিনি সুপারিশ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ইতোমধ্যেই বিএনপিসহ দেশবাসী এ ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। কিন্তু সরকার এখনো নির্বাক ও নির্বিকার। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি আবারও দাবি করছে, দুর্নীতি নিয়ে সরকারের দুই ক্ষমতাধরের কথোপকথন অস্বীকার না করে আইনমন্ত্রী তা যেহেতু স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই কালবিলম্ব না করে অবশ্যই এ ঘটনাকে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে বিচার বিভাগকে জড়িয়ে ফেলার স্বীকৃত অপরাধকে আলাদাভাবে বিবেচনায় নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে বিএনপি। তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার জন্য বিএনপি এই মুহূর্তে আইনমন্ত্রী, বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টাসহ এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার পদত্যাগ দাবি করছে। অবিলম্বে তদন্তসাপেক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জোর দাবি জানাচ্ছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশবাসীর কাছে আজ স্পষ্ট যে দেশে এখন দুর্নীতির এক মহোৎসব চলছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই চলমান এই লুটপাট আর দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। মন্ত্রী, এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ক্ষমতাসীন দলের মেয়র, চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যে দুর্নীতির সুযোগ নিচ্ছেন না। রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোটা প্রশাসনকে অংশীদার করা হয়েছে দুর্নীতির এই চক্রের। সংবিধান ও রাষ্ট্রের অভিভাবক খোদ বিচার বিভাগকেও এখন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে সরকারি দলের লোকেরা এখন দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। নিজেদের অপকর্ম এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে শত চেষ্টা করেও আর তা তারা চেপে রাখতে পারছেন না। কোনো না কোনো উপায়ে তা জনসম্মুখে চলে আসছে। ভেসে বেড়াচ্ছে ভার্চুয়াল জগতে। ফাঁস হয়ে যাচ্ছে নানান অপকর্মের কুৎসিত চিত্র। খসে পড়ছে মহাদুর্নীতিবাজদের মুখোশ।