দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক রূপ নিচ্ছে

0

করোনাভাইরাসের প্রথম দফা সংক্রমণের ধকল কাটিয়ে উঠার আগেই বিশ্বব্যাপী প্রবলভাবে ফিরে এসেছে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ। প্রথম দফায় এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল তিন লাখের নিচে। দ্বিতীয় দফা সংক্রমণে এই সংখ্যা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ। মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে। অনেক দেশ আবার লকডাউন আরোপ করেছে। দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে বাংলাদেশেও। এই দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার ল্েয প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। তবে, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এলেও ফের লকডাউনের মতো বিধি-নিষেধ আরোপের চিন্তা এখনই করছে না সরকার। গত সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল মার্চ মাসে। লকডাউন ও সাধারণ ছুটির কারণে প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল জনজীবন। দীর্ঘদিন ধরে ঘরবন্দি থেকে মানুষ যেন হাঁপিয়ে উঠেছিল। জীবিকার প্রশ্নেও অনেকে বাধ্য হচ্ছে ঘর থেকে বেরোতে। পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরাও হচ্ছে প্রচুর। বেড়েছে ছোটখাটো অনুষ্ঠানাদি করা কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার প্রবণতা। বাস বা অন্যান্য যানবাহনে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। হাট-বাজারে মানুষ গাদাগাদি করে কেনাকাটা করছে। রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তদুপরি বেশির ভাগ মানুষ মুখে মাস্কও পরছে না। এভাবে চললে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ আগের চেয়েও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সংগত কারণেই সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কঠোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বলা হয়েছে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি কোনো অফিসেই মাস্ক ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবে না, কোনো সেবাও পাবে না। এখনো করোনার প্রতিষেধক আসেনি, কার্যকর ওষুধেরও অভাব রয়েছে। এই অবস্থায় শুধু ব্যক্তিগত সচেতনতাই পারে করোনা প্রতিরোধ করতে। এর মধ্যে আছে মাস্ক পরা, বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং একজন থেকে আরেকজনের ন্যূনতম দূরত্ব মেনে চলা। মার্কেট, শিল্প ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও যাতে এসব নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা আশা করি, প্রথম দফার মতো দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকার কথার চেয়ে কাজ বেশি করবে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে হাসপাতালের শয্যা ও রসদ-সরঞ্জাম বাড়া পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী নিয়োগের পাশাপাশি সকল স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিণ প্রদান করতে হবে। একই সাথে প্রথম দফায় প্রতিশ্রুত প্রণোদনার অর্থ পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় চাচা আপন প্রাণ বাঁচা মার্কা দায়িত্ব পালনের বেশি পাওয়া যাবে না।