আদালতে স্বীকারোক্তি : টিভি দেখা নিয়ে বিরোধে স্বামীকে গালি দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করেন সাইফুল

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টেলিভিশনে সিনেমা দেখা নিয়ে বিরোধে স্বামীকে ‘শুয়ারের বাচ্চা’ বলে গালি দেন বৃষ্টি খাতুন। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন আটক স্বামী সাইফুল ইসলাম ওরফে মনা সরদার। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। সাইফুল ইসলাম মনা সরদার কেশবপুর উপজেলার পাঁচ বাকাবর্শি গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক সরদারের ছেলে।
জবানবন্দিতে সাইফুল ইসলাম ওরফে মনা সরদার বলেছেন, দুই বছর আগে একই উপজেলার চিংড়া বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে বৃষ্টি খাতুনকে তিনি বিয়ে করেন। তার মেঝো ভাই অন্যত্র কাজ করায় বাড়িতে থাকেন না। আর ভাইয়ের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তিনি তার বাবার বাড়িতে থাকেন। ফলে তিনি (সাইফুল) স্ত্রীকে নিয়ে মেঝো ভাইয়ের ঘরে থাকেন। গত ৭ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে তিনি ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন ঘরে বসে টেলিভিশন দেখছিলেন। তিনি (সাইফুল) তামিল ছবি দেখবেন আর তার স্ত্রী অন্য চ্যানেল দেখবেন, এনিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন তাকে শুয়ারের বাচ্চা বলে গালি দেন। এ সময় তিনি মা-বাবা তুলে গালি দেওয়ায় প্রতিবাদ করেন। তিনি তাকে বলেন,মা-বাবা তুলে গালি দিলে কেন ? জবাবে স্ত্রী তাকে বলেন,‘এর চেয়ে ভালো কথা তোকে আর বলা যাবে না’। এ সময় টেলিভিশনের রিমোট বৃষ্টির কাছে দিয়ে তিনি সেখান থেকে চলে যান। কিন্তু তাকে গালি দেয়ার কথা বারবার মনে পড়লে তার রাগ বেড়ে যায়। এরপর বারান্দা থেকে দা নিয়ে ঘরে ঢুকে দেখেন, বৃষ্টি টেলিভিশন চালিয়ে রেখে ঘুমাচ্ছেন। এ সময় তিনি বৃষ্টির বুকের ওপর বসে বাম হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরেন এবং ডান হাতে থাকা দা দিয়ে গলায় কোপ মেরে তাকে হত্যা করেন। হত্যার পর বাড়ির পাশে পুকুরে দা ফেলে দিয়ে বাইরে এসে চিৎকার করে কান্নাকাটি করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এলে তিনি (সাইফুল) প্রচার করেন যে, বৃষ্টির সাথে অন্য পুরুষের সম্পর্ক ছিল। তারা ৬/৭ জন এসে তাকে গলা কেটে হত্যা করে গেছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় বৃষ্টির বাবা কেশবপুর থানায় হত্যা মামলা করলে পুলিশ কেশবপুরের গড়ভাঙ্গা বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করে।