শিক্ষা সচলে পরিকল্পিত প্রস্তুতি প্রয়োজন

0

শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ যেকোনো দেশের উন্নয়নের মূল ভিত্তি। শিক্ষা মানসম্মত না হলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। দেশের উচ্চশিার মান নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিং বা বৈশ্বিক মান বিচারে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে। একটি শীর্ষ দৈনিকে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মাস ধরে কোনো কাস বা পরীক্ষা হয়নি। আবাসিক হলগুলো বন্ধ রয়েছে। অনলাইনে কাস নিয়ে শিার্থীদের কিছুটা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও অনেক শিার্থী থেকে গেছে এর আওতার বাইরে। আমরা জানি এ শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েরই একই অবস্থা। এ বছরের শুরুর দিকে কিছু কাস হলেও মাঝামাঝিতে কোনো কাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। কিছু বিভাগে সেমিস্টার শেষ করতে দু-একটি পরীা বাকি রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর অবশিষ্ট সময়ে বাড়তি কাস, সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে কাস ও শিাবর্ষের সময় কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
অনলাইনে কাস পরিচালনা করতে গিয়েও সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কারণ অনলাইন শিা পদ্ধতিটি বাংলাদেশের প্রোপটে শিক ও শিার্থী উভয়ের জন্য নতুন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্রেণিকে শিক সহজেই কাস নিয়ন্ত্রণ এবং একই সঙ্গে সব শিার্থীর কাজ মূল্যায়ন করতে পারেন। শ্রেণিকে একজন শিক কম মনোযোগী শিার্থীদের শনাক্ত করে তাৎণিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তাদের কাসে আকৃষ্ট করতে পারেন। শ্রেণিকে পাঠদানের সময় শিার্থীদের যেকোনো প্রশ্নের কোনো জটিলতা ছাড়াই সহজে উত্তর দেওয়া যায়। শিক ও শিার্থীদের মধ্যে সরাসরি কথোপকথনের অভাবে অনলাইন কাস প্রাণবন্ত হয় না। আর সে কারণেই শিক, শিার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপকে অপো করতে হবে, কবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে, সেই দিনটির জন্য। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবশ্য অনলাইনে কাশ নিয়ে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। তারা কর্মজীবনে প্রবেশে এগিয়ে থাকার সুযোগ নিতে চাইবে। করোনা দুর্যোগে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট দেখা দিলে তা উচ্চশিারত শিার্থীদের কর্মজগতে প্রবেশে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেশনজট দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপকে তাই বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও দূরদর্শী পদপে নিতে হবে। করোনা দুর্যোগে সব স্তরের শিার্থীরাই তির মুখে পড়েছে। আবার অনলাইন শিা পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ ও সামর্থ্য অনেক শিার্থী কিংবা অভিভাবকের নেই। কাজেই বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কার্যকর পদ্ধতি কী হবে তা এখনই ভেবে রাখতে হবে। ভবিষ্যতে দিনে ও রাতে দুই শিফট চালুর পাশাপাশি সেশনজট কমাতে ঐচ্ছিক ও সাপ্তাহিক ছুটি সাময়িকভাবে বন্ধের বিষয়টিও বিবেচনা করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।