এখনি কৃষি সহায়তার ব্যবস্থা নিন

0

তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হয়েছে এবার। কয়েক দফায় পানি বেড়েছে। মানুষ বানভাসি হয়েছে। উঁচু জায়গায়, নৌকায় ও বাঁধে আশ্রয় নিতে হয়েছে তাদের। কোথাও কোথাও ত্রাণ মোটামুটি পেয়েছে মানুষ, তবে প্রত্যন্ত জনপদে কারো পদচারণার খবচর মিলছে না। বানভাসী মানুষ দীর্ঘ সময়ের ভোগান্তিতে পড়েছে। সেপ্টেম্বরে আবার বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
দেশের উত্তর ও দণিাঞ্চলে বানের পানিতে ফসলের ব্যাপক তি হয়েছে। তিগ্রস্ত হয়েছে শাকসবজি, সদ্য রোপণ করা আমনের চারা। বীজতলা ও পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। উত্তরের কয়েকটি জেলায় আমনের চারা ও বীজ সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোরের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ফসল ও ঘের একাকার হয়ে আছে। সরকারি হিসাবে বরিশালে আবাদ করা ৯০ হাজার ৯৯২ হেক্টর আউশ েেতর মধ্যে পানিতে ডুবেছে ২৭ হাজার ৪২৯ হেক্টর। দুই লাখ ৫৬ হাজার ৯৯৮ হেক্টর জমিতে আমন রোপণ ও বীজতলা তৈরি করা হয়েছিল। পানিতে ৭৯ হাজার ৬৭৯ হেক্টর জমির তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুই হাজার ৯২৫ হেক্টর জমির পানের বরজের মধ্যে পানিতে তিগ্রস্ত হয়েছে ২৯২ হেক্টর। গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে। তিন হাজার ৪৭০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছে কৃষি অধিদপ্তর। প্রাথমিক হিসাবে বরিশাল বিভাগে ৩০ শতাংশ ফসলি জমি পানিতে তিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষক বলছে বেশি। তি হয়েছে খুলনা বিভাগেও। বাগেরহাটের শরণখোলার কিছু উঁচু জমিতে ইরি চাষ হলেও কয়েক হাজার একর ধানের জমি এখনো পানিতে। কয়রা ও পাইকগাছায় বাধ ভেঙে ডুবে গেবে সব। যশোরের ভবদহ আবারো অভিশাপ হয়েছে। ডুবছে শার্শা উপজেলা।
ভোগান্তিতে পড়েছে আমন চাষিরা। প্রান্তিক চাষিরা পড়েছে বিপাকে। চারা সংকটের কারণে অনেক জমি অনাবাদি থেকে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পত্রিকার খবর কুড়িগ্রামে তিন দফা বন্যায় ফসলি জমির ব্যাপক তি হয়েছে। এক হাজার ৪০০ হেক্টর আমনের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। সরকারি হিসাবে রংপুর বিভাগে রোপা আমন, আউশ, পাট, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসলের তি হয়েছে প্রায় ১৭৩ কোটি টাকার। ১১১ হেক্টর আমনতে ও এক হাজার ২৬৬ হেক্টর জমির আমনের চারা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। তিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় দুই লাখ কৃষক। যশোরাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ক্ষতি মারাত্মক হতে পারে। বর্তমান অবস্থায় কৃষকরা সরকারি কৃষি সহায়তা ও প্রণোদনার প্রত্যাশী। তির হিসাব করে তাদের সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বন্যাকালীন সহায়তাও তাদের দিতে হবে। কৃষিঋণ আদায় বন্ধ করে নতুন ঋণ উপকরণপ্রাপ্তি সহজ করতে হবে। অন্যথায় কৃষক ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। ফলে. ক্ষতিগ্রস্ত হবে চাষাবাদ। আমনধান ও সবজি এক সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাজার পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা সরকারকে এখনি উপলব্ধি করতে হবে।