প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা

0

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গতি এখন ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে অফিস-আদালত, সরকারি-বেসরকারি অফিস চলছে পুরোদমে। দেওয়া হয়েছে। বলতে গেলে সব ধরনের আর্থ-সামাজিক কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এসেছে। অন্যদিকে কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, লকডাউন বা রেড জোন সব েেত্রই ঢিলেঢালা ভাব এসে গেছে। বিদেশ থেকে আসা মানুষও কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা ঠিকমতো পালন করছে না, এমন অভিযোগ রয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের কোনো কৌশল কাঠামোই এখন আর সেভাবে দৃশ্যমান নয়। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে করোনাকাল। দৃশ্যত বাংলাদেশে সংক্রমণের গতি ধীর হলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনো তা ঊর্ধ্বমুখী। তাঁদের আশঙ্কা, ঝুঁকি কাটেনি, বরং বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুসারে ৩৩ রোগতাত্ত্বিক সপ্তাহে এসে বাংলাদেশে আগের সপ্তাহের চেয়ে সংক্রমণের হার বেড়েছে। এরই মধ্যে আবার করোনা পরীার ভূতুড়ে ফল নিয়ে নতুন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। করোনা পরীার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, দেখা দিয়েছে আস্থাহীনতা।
তার পরও আশার আলো দেখাচ্ছে ভ্যাকসিন। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর থেকে টিকা আবিষ্কারে নেমেছে বিভিন্ন দেশ। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আবিষ্কৃত টিকা তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত পরীার পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা ভারতে উৎপাদিত হলে তা পাওয়ার েেত্র বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে বলে আশ্বস্ত করেছেন সদ্য ঢাকা সফর করে যাওয়া ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। আর ভারতের তৈরি সম্ভাব্য কভিড-১৯ টিকার পরীামূলক প্রয়োগের জন্য বাংলাদেশ ‘প্রস্তুত’ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব। করোনাভাইরাসের টিকার পরীামূলক প্রয়োগ বাংলাদেশে হওয়া উচিত বলে অভিমত দিয়েছে কভিড-১৯ প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। করোনাভাইরাসের টিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনা মূল্যে প্রাপ্তি, টিকার ট্রায়াল, উৎপাদন, সংরণ ও প্রয়োগে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে সরকারকে তারা তাগিদও দিয়েছে। পরামর্শক কমিটি মনে করে, টিকা আন্তর্জাতিক বাজারে এসে গেলে তা কিভাবে প্রথমেই বাংলাদেশে নিয়ে আসা যায়, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা এখনই করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে কী পরিমাণ টিকার প্রয়োজন, তা সংগ্রহে কত খরচ হবে কিংবা বিনা মূল্যে পাওয়া যাবে কি না এ ব্যাপারে এখনই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছে তারা। পরামর্শক কমিটি মনে করে, বাংলাদেশে টিকার কিনিক্যাল ট্রায়াল হলে প্রথমত বাংলাদেশে এর সমতা বৃদ্ধি ও তা প্রমাণের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এই টিকা সফল প্রমাণিত হলে সর্বাগ্রে পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে।
তবে সব কিছুর আগে আমাদের সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরীার ফল যাতে নির্ভুল হয় সে ব্যাপারে সর্বাত্মক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। একই সঙ্গে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।