রেলে জেলজরিমানার সিদ্ধান্ত স্থগিত হোক

0

রেলে এখন থেকে নিজ নামের টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করা যাবে না। কোনো যাত্রী অন্যের নামে কেনা টিকিটে ভ্রমণ করলে তাকে অর্থদণ্ড ছাড়াও তিনমাস কারাদণ্ড দেয়া হবে। টিকিট কিনতে হবে অনলাইনে। মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে টিকিট কাটতে নাম ঠিকানা ছাড়াও আইডি কার্ডের নম্বর দিতে হবে। মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা হচ্ছে রেলের টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত যাতে কেউ ভঙ্গ করতে উৎসাহী না হয় সে জন্যই ওই সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত কার্যকরে রেলে কর্মরতদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রেলের সিদ্ধান্ত আজ থেকে কার্যকর হবে। আমরা রেলের টিকিট কালোবাজারি, টিকিটে ভ্রমণ এবং অন্যের সিট দখল করে ভ্রমণ বন্ধের সব পদেেপর প।ে তবে অসময়ে অপ্রস্তুত অবস্থায় কোনো শাস্তির বিধান কার্যকর ও জনগণের আর্থিক তিসাধনের পে নই। আমরা মনে করি রেলের এই কাজটি এতো তাড়াহুড়ো করে করার কোনো যুক্তি নেই। কারণ তাদের সংশ্লিষ্ট জনবল এই অনলাইন টিকিট বিক্রিতে যেমন দ হয়ে ওঠেনি তেমনি সাধারণ যাত্রীরা এই কার্যক্রমই বুঝতে পারেনি। তাদের কোনো প্রযুক্তি জ্ঞান ও সাপোর্ট নেই।
একথা আমরা সবাই জানি যে, দেশের রেলওয়ে টিকিট কালোবাজারির স্বর্গরুট। একইসাথে বিনাটিকিটে টিটি টিসিকে ঘুষ দিয়ে ঘুরে বেড়ানোর একমাত্র যানবাহন। বছরের পর বছর এই দুটি কারণেই লাভের সব সম্ভাবনা ধ্বংস করে বিপুল লোকসান গুণে আসছে। সব সরকারই এ থেকে রেলকে বাঁচাতে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানদের চেষ্টার ফল এখনো পর্যন্ত ব্যর্থ। আমাদের ধারণা সরকার তাই দুর্নীতি অনিয়ম বন্ধে এই অনলাইন ব্যবস্থা চালু করেছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন রেল চলাচল বন্ধ রাখার পর সীমিত আকারে স্বল্প যাত্রীর সুযোগ দিয়ে সম্প্রতি চালু করেছে। করোনায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে টিকিট কাউন্টারের বদলে অনলাইনে টিকিট ব্যবস্থা চালু করে। সময়ের ব্যবধান এ ব্যবস্থা দুর্নীতি হ্রাসে কার্যকর গণ্য হওয়ায় সরকার অনলাইন ব্যবস্থা বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে ব্যপক তোড়জোড় শুরু করেছে। তাদের তৈরি বিধান না মানলে জেলজরিমানার বিধানও করেছে। শুধু করেনি প্রশিতি টিম। গতকাল পর্যন্ত যাত্রীদের অভিযোগ তারা অনলাইনে টিকিট ক্রয়ে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। আগেরদিন একনামে একাধিক যাত্রীর জন্য একটা টিকিট দিয়েছেন। টিকিট পেপার দিতে পারছেন না কাউন্টার ম্যান। অপরদিকে ট্রেনের মূল যাত্রী সাধারণ মানুষের নেই স্মার্ট ফোন। যাদের আছে তারা টিকিট ক্রয়ের নিয়ম জানেন না। আঠারো বিশ বছর বয়সীদের স্মার্ট ফোন দূরে থাক অনেকের ভোটার আইডি কার্ডও নেই। এরইমধ্যে হঠাৎ জেলজরিমানার ঘোষণা এক চরম সংকট ও অসম্মানজনক পরিস্থিতির আশঙ্কা জন্ম দিয়েছে। আমরা মনে করি রেল মন্ত্রণালয়ের উচিৎ জেলজরিমানার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করে সম্ভাব্য জটিলতা নিরসনের পথ তৈরি করা। একইসাথে রেল কর্মীদের পর্যাপ্ত প্রশিণ দিয়ে দ জনবল তৈরি করে আইন কার্যকর করা। আমরা আশা করি রেল মন্ত্রণালয় জরুরি বিবেচনায় বিষয়টি কার্যকরে পদপে নেবে।