এটা সত্য নয় যে, আমি টেস্ট খেলতে চাই না’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ওয়ানডে ক্রিকেটে মোস্তাফিজুর রহমানের শুরুটা স্বপ্নের মতো। পাঁচ বছর আগে ভারতের বিপক্ষে অভিষেকে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন বাঁহাতি এ পেসার। দুর্বোধ্য কাটার, কার্যকরী স্লোয়ার আর দুর্দান্ত ইয়র্কারে দ্রুতই বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের অবস্থান তৈরি করে নেন তিনি। জয় করেন ভারতের আইপিএলও। সাদা বলে বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা পেসার মোস্তাফিজই। যদিও লাল বলে নিজেকে অতটা মেলে ধরতে পারেননি এই পেসার। গত বছরের মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরে সবশেষ টেস্ট খেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর আর সাদা পোশাকে দেখা যায়নি তাকে।
গুঞ্জন রয়েছে, টেস্টে আগ্রহী নন মোস্তাফিজ। তবে সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজকে তিনি বলেছেন, ‘আমি সব ফরম্যাটে খেলতে চাই। এটা সত্য নয় যে টেস্টে অনীহা আছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি বিশ্বাস করি- ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে সেরা হলেই তাকে গ্রেট বোলার বলা যাবে না। যদি না সে সব ফরম্যাটে ভালো হয়।’
মোস্তাফিজের প্রধান শত্রু এখন ফিটনেস। ক্যারিয়ারের শুরুতে ডানা মেলে উড়তে থাকা এই পেসারকে মাটিতে নামিয়ে আনে চোট। পিঠের ইনজুরিসহ নানান ছোট-বড় সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে খেলতে হচ্ছে মোস্তাফিজকে। আর পরিপূর্ণ ফিটনেস না থাকলে টেস্ট ক্রিকেট খেলা সম্ভব নয়। বোলারদের জন্য তো নয়ই। মোস্তাফিজ বলেন, ‘শারীরিক সক্ষমতাকেও দেখতে হবে। অনেক সময় আমাদের দীর্ঘ সফরে বেশ কয়েকটি ম্যাচ থাকে। আমার মাইনর ইনজুরি এবং আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো সাংবাদিকরা জানে না, সেসব কারণে টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে বিশ্রামে রাখে। কিন্তু এভাবেই খবর রটে যায় যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না।’
একদিনের ক্রিকেটের চেয়ে টেস্টে বরং ভালো করার সুযোগ বেশি থাকে বলে মনে করেন মোস্তাফিজ, ‘টেস্টে ভালো করার একটা সুযোগ সবসময়ই থাকে। একটা স্পেল খারাপ হলো, আপনি আরেকটা স্পেল বোলিং করার সুযোগ পাবেন। একটা স্পেল খারাপ হলে আরেকটি দিয়ে পুষিয়ে দেয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- আপনি প্রথম ৫ ওভারে এসে ৫০ রান দিলেন। পরের ৫ ওভারে ৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নিলেন। কিন্তু সাদা বলে এই সুযোগটা থাকে না। সাদা বলে আপনি ৯ ওভার ভালো করলেও একটা ওভার যদি খারাপ করেন, সেটি দলের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে।’
মোস্তাফিজ এখন বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণকে নেতৃত্ব দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এজন্য বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনার কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। কাটার, স্লোয়ারের পাশাপাশি চেষ্টা করছেন বল সুইং করানোর। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত সিরিজে বোলিং আক্রমণে শুরুতেই দেখা গিয়েছিল মোস্তাফিজকে। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগে বোলিংয়ে আসি। একটা উইকেট নিতে পারলে যেন আমার দল উপকৃত হয় সেই লক্ষ্যে। মাশরাফি ভাই এখন যা করছেন, তিনি যখন অবসরে যাবেন তখন কাউকে তার ভূমিকাটা নিতে হবে। এই জন্যই আমি সুইং করানো ও বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছি। প্রথম ৫ ওভারে এসব কাজে লাগিয়ে একটা উইকেট নিতে পারলে আমার দলেরই লাভ।’ মোস্তাফিজ জানিয়েছেন, তিনি দলের তরুণ পেসারদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চান। তাদের শেখাতে চান। মাশরাফির জায়গাটা সত্যিই নিতে চাইছেন এই পেসার।