বিশ্বকাপ পেছালে লাভ বাংলাদেশের?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে করোনার ধাক্কায় যথাসময়ে টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চিয়তা। বিশেষ করে মহামাহির পরপর-ই ষোলো দলের মহাযজ্ঞ আয়োজন করার অনুমতি দেবে কিনা অস্ট্রেলিয়া সরকার তা নিয়েই যত প্রশ্ন। আবার হুট করে বিশ্বকাপ আয়োজন করে আইসিসি আর্থিকভাবে লাভবান হবে কিনা তা নিয়েই রয়েছে ধোঁয়াশা। বিশেষ করে যদি ক্লোজডোরে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় তাহলে আইসিসির ম্যাচ আয়োজন করা কঠিন হয়ে যাবে। এরই মধ্যে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক, মহাদেশীয় ইভেন্ট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। টোকিও অলিম্পিক পাক্কা এক বছর পিছিয়ে গেছে। ইউরো কাপও ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হবে। ফ্রেঞ্চ ওপেন ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেন পিছিয়ে গেছে এক বছর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। আইসিসির সবশেষ প্রধান নির্বাহীদের সভায় সদস্যভুক্ত সবগুলো দেশ বিশ্বকাপের জন্য আরও সময় দিতে আগ্রহী।
বিশ্বকাপ কোনো কারণে পিছিয়ে দেওয়া হলে দুই-তিনটি জায়গায় লাভবান হবে বাংলাদেশ। প্রথমত, বিশ্বকাপ দুই মাস পিছিয়ে দেওয়া হলে- বাংলাদেশ সাকিব আল হাসানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় নামতে পারবে। নিষেধাজ্ঞায় থাকা এ ক্রিকেটার মাঠে ফিরতে পারবেন আগামী ২৯ অক্টোবরের পর। বর্তমান সূচিতে বিশ্বকাপ হলে সাকিবকে ছাড়া খেলতে হবে। দ্বিতীয়ত, করোনার পর টি-টোয়েন্টি দল গুছিয়ে নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবে বাংলাদেশ। বর্তমান সূচিতে বিশ্বকাপ হলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি প্রস্তুতিও নিতে হবে। ফলে বিশ্বকাপের জন্য শতভাগ প্রস্তুতি নেওয়া যাবে কিনা সেটা নিয়েও আছে ভাবনা। তৃতীয়ত, বাংলাদেশ দলের স্পন্সর। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি জাতীয় দল, ‘এ’ দল, অনূর্ধ্ব-১৯ দল এবং নারী ক্রিকেট দলের স্পন্সরের দরপত্র আহ্বান করেছিল বিসিবি। তিন দফা দরপত্রের সময় বাড়ানো হলেও বিসিবির ডাকে সাড়া দেয়নি কেউ। বিশ্বকাপ পিছিয়ে গেলে সাকিব দলে ফিরলে স্বাভাবিকভাবেই স্পন্সর প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখাবে। বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড পেরিয়ে এ প্রতিযোগীতার মূল আসরে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম রাউন্ডে বি গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নামিবিয়া, নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ড। এ গ্রুপে রয়েছে আয়ারল্যান্ড, ওমান, পাপুয়া নিউ গিনি ও শ্রীলঙ্কা। দুই গ্রুপ থেকে সেরা দুই দল যাবে পরের রাউন্ডে। ১৯, ২১ ও ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশের খেলার সূচি রয়েছে। যদি এ সময়েই বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় তাহলে সাকিবকে পাওয়া যাবে। বাংলাদেশ পরের রাউন্ডে উঠলেও সাকিবের থাকা হবে না। কারণ বিশ্বকাপের মাঝে দল পরিবর্তনের সুযোগ নেই। এজন্য বিশ্বকাপ পিছিয়ে গেলেই বাংলাদেশের লাভ।
বিষয়টি স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করেননি জাতীয় দলের নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু,‘এটা ঠিক সাকিবকে পাওয়া গেলে বাংলাদেশের লাভ। যদি সাকিব বিশ্বকাপে খেলে অবশ্যই বাংলাদেশের ভালো করার সুযোগ বেড়ে যাবে।’ পাশাপাশি দলও পর্যাপ্ত সময় নিয়ে তৈরি করার সুযোগ থাকবে বলে জানালেন তিনি। তাঁর ভাষ্য,‘বর্তমান পরিস্থিতিতে খেলার চিন্তা করা কঠিন। যদি এমন কিছু হয় তাহলে আমরা সময় নিয়ে দল গঠন করতে পারব। বেশি খেলোয়াড়দের দেখতে পারব। যারা দলে আছে, যারা বাইরে আছে তাদের মধ্যে একটা তুলনা করতে সময় পাবো।’ আপাতত খেলা নিয়ে কোনো চিন্তা করছেন না মিনহাজুল আবেদীন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর সময় নিয়ে বল মাঠে গড়ানোর পক্ষে তিনি,‘আমাদের ছেলেদের সুরক্ষার বিষয়টি সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে অবশ্যই কিছুটা সময় দিতে হবে। কারণ ছেলেরা মাঠে থাকবে। তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিশ্চিত করতে হবে।পাশাপাশি তাদের ফিটনেসের দিকটিও দেখতে হবে। ’এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিনটি সিরিজ স্থগিত হয়েছে। মাঠে ফেরার পর স্থগিত হওয়া সিরিজগুলো দ্রুত সময়ে খেলতে হতে পারে বাংলাদেশকে। তৈরি করা হতে পারে নতুন এফটিপি। এজন্য পর্যাপ্ত খেলোয়াড় তৈরি রাখার পরিকল্পনা প্রধান নির্বাচকের,‘ছেলেরা মাঠে ফিরলে অবশ্যই টানা খেলার প্রস্তুতি থাকতে হবে। এজন্য তাদের ফিটনেসকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। স্কিল অনুশীলনের বিকল্প কিছু নেই। আমরা চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব খেলোয়াড় প্রস্তুত রাখা। যদি কোনো সিরিজ দ্রুত সময়েও আয়োজন করা হয় আমরা যেন খেলোয়াড় প্রোভাইড করতে পারি সেদিকটি নিশ্চিত করতে হবে আমাদেরকে।’