তাপদাহে চৌগাছা বাজার জনশূন্য

0

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ প্রচন্ড গরমের কারণে চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন সব শ্রেণি- পেশার মানুষ। তবে বেশি কষ্টে দিন পার করছেন সমাজের নিন্ম আয়ের মানুষেরা। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সকলকেই বাড়তি সতর্কতার সাথে চলাফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল হতেই মানুষ গরমের ঝাঁঝ অনুভব করতে থাকেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে গরম। এদিন বাজারে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম দেখা যায়। দুপুরের দিকে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হয়ে যায় ফাঁকা। যারা প্রয়োজনের তাগিদে এসেছেন তারা দ্রুত কাজ সেরেই ফিরেছেন বাড়িতে। তবে কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষগুলো এই তাপদাহের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে রাজমিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন সোবহান আলী, নাজমুল হোসেন, আল আমিন। তারা জানান, এক সপ্তাহ ধরে প্রচন্ড তাপের কাছে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা বলেন, ঠিকমত কাজ করতে পারছিনা। গরমের কারণে সব কিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে। ভ্যান চালক ইসাহক আলী বলেন, বয়সের ভারে আগের মত আর চলতে পারিনা। তারপরও সংসারের চাকা সচল রাখতে রাস্তায় বের হয়েছি। কিন্তু গরমে বেশি ‘খ্যাপ মারতে’ পারছি না ।আবার রাস্তায় মানুষও কম।
এ দিন দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চৌগাছার প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত স্বাধীনতা ভাস্কর্য় মোড়ে দেখা যায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়টি। যেখানে কাক ডাকা ভোর হতে মধ্যরাত পর্যন্ত মানুষে একাকার সেখানে দু’একজন মানুষকে দেখা যায় চলাচল করতে। এ সময় কথা মোড়ের ওষুধ ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন, হোটেল ব্যবসায়ী রহমত আলীর সাথে। তারা জানান, তাপের কারণে মানুষ বাজারমুখি হচ্ছে কম। প্রয়োজনে যারা আসছেন তারা দ্রুতই ফিরছেন বাড়িতে, সে কারণে ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।
এ সময় ভাস্কর্য মোড়ে কথা হয় চৌগাছা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জাহিদুর রহমান বকুল ও সরকারি শাহাদৎ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক ইংরেজি শিক্ষক শওকত আলীর সাথে। তারা জানান, সংসারের কিছু জরুরি সামগ্রী কিনতে বাজারে এসেছি। কিন্তু গরমের কারণে এক মুহূর্তও কোথাও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি চরম ভয়ানক বলে তারা মন্তব্য করেন। বাজারে আগত বয়োবৃদ্ধ আলতাফ হোসেন বলেন, ৭৫ বছর বয়সের মধ্যে এমন গরম ও রোদ আমি কখনও দেখিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অহেতুক ঘরের বাইরে না আসা ভাল। যারা বাইরে আসবেন ছাতা ব্যবহারের পাশাপাশি হাতে একটি পানির বোতল নিয়ে বের হবেন। অধিক পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। কখনও কেউ শারীরির অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত ছায়া জায়গায় বসে পড়বেন এবং চেষ্টা করবে দ্রুত চিকিৎকের পরামর্শ নিতে।