দেশে ১০৪ চিকিৎসক, ৭১ নার্স করোনায় আক্রান্ত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) তথ্যানুযায়ী দেশে এ পর্যন্ত ১০৪ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সিলেটের এক চিকিৎসক মারা গেছেন। তাদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে- সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। এরপর যথাক্রমে রয়েছে কিশোরগঞ্জে, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে নরসিংদীতে ৩ জন, গাজীপুরে ৭ জন, নারায়ণগঞ্জে ১৪ জন, কিশোরগঞ্জে ২১ জন, ঢাকায় ৩৮ জন, মাদারীপুরে ২ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লায় ২ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, চাঁদপুরে ১ জন, লক্ষ্মীপুরে ১ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ১ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে শেরপুরের ২ জন, ময়মনসিংহে ৩ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া বরিশাল বিভাগের মধ্যে বরিশাল জেলায় ৩ জন, রংপুর বিভাগের মধ্যে রংপুর জেলায় ২ জন, খুলনা বিভাগের মধ্যে খুলনা শহরে ১ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। আর সিলেট বিভাগের মধ্যে যিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি মারা গেছেন। এদিকে বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশন বলছে এই সংখ্যাটি আরও বেশি। তাদের দাবি দেশে ১২৮ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এতো চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক ডা. নিরূপম দাশ বলেন, করোনায় সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা বঞ্চিত হতে পারেন। এতে বড় রকমের বিপর্যয়ের মুখে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। অপরদিকে দেশে ৭১ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটস সংগঠনের মহাসচিব সাব্বির মাহমুদ তিহান।
তিনি বলেন, এসব নার্স আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার ঘাটতি ও অনেক রোগী তথ্য গোপন করে সেবা নেওয়ায় সংক্রমণের হার আরও বেশি। তাছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে নার্সরা কোভিড-১৯ এ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। তাই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করলেই নার্সদের মধ্যে এই সংক্রমণ ঝুকি অনেকাংশে কমে যাবে। অনেকে তথ্য গোপন করে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেন জানিয়ে তিনি তাদের অনুরোধ করে বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ তথ্য গোপন করে হাসপাতালে সেবা নেবেন না। সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে সাব্বির মাহমুদ তিহান আরও বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে নার্সদের মাধ্যমে সবর্োচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে হলে তাদের সব সমস্যা দূর করতে হবে। তাহলে দেশের স্বাস্থ্য সেবার মান অনেক বৃদ্ধি পাবে। সরকারও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। রোববার বিকেলে চীন থেকে প্রয়োজনীয় কিটসহ ১২ লাখ ২২ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক, সাড়ে সাত হাজার এন-৯৫ মাস্ক, ১৩০টি ইলেকট্রিক থার্মোমিটার, দুই হাজার প্রটেকটিভ গ্লাভস, ১০ হাজার ২০০টি মেডিক্যাল সেফটি গ্লাস, ২০০টি গগলস এবং ১০ হাজার ৪৫৯টি ব্যক্তিগত সুরক্ষাসহ (পিপিই) বিভিন্ন চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রী নিয়ে দেশে ফিরেছে বিমান বাহিনী একটি দল। দেশে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৯১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭৫ জন।