বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

0

গত রবিবার সারাদেশে পালিত হয় ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস।’ আর এ সময় চলছে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবর্ষ উদযাপন। সঙ্গত কারণে দিবসটির বার্তা ছিল ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার-সুরতি ভোক্তা অধিকার।’ বাজার অর্থনীতির অস্থিতিশীল অবস্থায় সাধারণ মানুষ এমনিতেই বিপর্যস্ত, অসহায়। কোন একটি কারণে দ্রব্যমূল্য লাগামহীন হলে পুরো ব্যবস্থায় পড়ে তার আগ্রাসী প্রভাব। বাজারে ঘাটতি কিংবা সঙ্কট না থাকলেও তা তৈরি করতে ব্যবসায়ী চক্রের সময় পেণ করতে হয় না। সামান্য অজুহাতে বাজারকে নিয়ন্ত্রণহীন করতে এসব অসাধু সিন্ডিকেটকে ভাবতেও হয় না। দেশে এখন সর্বগ্রাসী আতঙ্কের মতো বিরাজ করছে করোনাভাইরাসের দুঃসহ সংক্রমণ। যা সারা বিশ্বকে এক অজানা আশঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যেও। যার সরাসরি আঘাত এসে বেসামাল করে দিচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজার দর। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল হলেও অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের উচ্চমূল্যে জনগণের নাভিশ্বাস হওয়ার উপক্রম। নিত্যপণ্য যেমন চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, আটা-ময়দা সবই দাম বাড়তে থাকার পর্যায়ে। এটাকেও ব্যবসায়ীদের এক ধরনের কূটকৌশল বলা যায়। কারণ সামনেই রমজান। সে জন্য ব্যবসায়ীরাও প্রহর গুনছে কিভাবে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় দ্রব্যমূল্যকে লাগামহীন করা যায়। তবে এবার বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বস্ত করা হয়, একটি বিশেষ কমিটি কঠোর পর্যবেেণ রাখবে জনগণের নিত্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে। ৩ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে পুরো কাজটির নজরদারিতে থাকবে ভোক্তা অধিকার সংরণ দফতর। দেখা যাক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে সরকারী সংস্থাগুলো এবার কতখানি ভোক্তাদের অসহনীয় দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে পারে। আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হওয়ার সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও পড়েছে করোনাভাইরাসের চরম প্রকোপ। আর এক শ্রেণীর অসৎ চক্র তো ওঁৎ পেতে বসে থাকে বাজার ব্যবস্থাকে অসহনীয় করে তুলে তাদের মুনাফার হার যত বেশি বাড়ানো যায়। ভোক্তা অধিকার দিবস বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে জাতির পিতাকে উৎসর্গ করা হয়। আর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ, শুধু উৎসব কিংবা আড়ম্বর নয়, প্রাসঙ্গিক সমস্ত কর্মপ্রবাহে জনসাধারণকে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করেছে সরকার। যা তাদের প্রতিদিনের জীবনমান উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। আর সেই কারণে এবারের ভোক্তা অধিকার দিবসের গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্যে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখাই মূল বিবেচ্য বিষয়। এ ব্যাপারে বাণিজ্য সচিব আশস্ত করেন- সামনে রমজানের সময় কোন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে না। কারণ বাজার ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় রাখতে মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ কমিটির ওপর দায়ভাগ অর্পণ করছে। সরকার এবার বাজার ব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। কোন কিছুর ওপর চাপ তৈরি না করেও সাধারণ মানুষের নিত্যজীবন সহনীয় করে তুলতে সরকার তার যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত হবে এই বিশেষ কমিটি। তারা শুধু রজমান নয়, সারা বছর তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। অথচ মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে বাজারে চাল, আলু, সবজিসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, আরও বাড়বে। ফলে কমিটির আশ্বাসে মানুষ বিশ্বাস রাখতে পারছে না। আমরা মনে করি, রমজান নয়, বাজার পরিস্থিতির ভয়াবহ সময় এখন। এ কারণে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এখুনি।