অনশনের পঞ্চম দিনে খুলনায় ১৮ পাটকল শ্রমিক হাসপাতালে

0

খুলনা প্রতিনিধি॥ ১১ দফা দাবিতে খুলনা-যশোর অঞ্চলের নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিক আন্দোলনের পঞ্চম দিন চলছে। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল খালিশপুর, আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার প্রায় অর্ধ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচণ্ড শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করে এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) পর্যন্ত ১৮ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন। স্যালাইন পুশ করা হয়েছে ১৩০ জনকে।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার মিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোড, আলীম ও ইস্টার্ন জুটমিলের শ্রমিকরা আলীম মিল এবং নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার কার্পেটিং, জেজেআইয়ের শ্রমিকরা স্ব স্ব মিলগেটের সামনে ফজরের নামাজ আদায় করেন। নামাজের পরপর খালিশপুর বিআইডিসি রোড, আটরা শিল্প এলাকার আলীম জুটমিল গেট ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ শুরু হয়। এদিকে পাটকল নেতারা বৈঠক করার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। রাতে পাট মন্ত্রণালয়ের ফার্মগেটের অফিসে তাদের সভাটি হবে। এছাড়া গত ৩১ ডিসেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসনের বৈঠকে পাটকল নেতারা উপস্থিত না হওয়ার কারণ জানতে তাদের নোটিশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সমস্য সমাধানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি। বিজেএমসির চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ জানান, মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়ে পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের নেতারা ঢাকায় এসেছেন। পাটকল সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন ও শাহানা শারমিন জানান, তারা ঢাকায় বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করছেন। বৈঠক ফলপ্রসূ হলে হয়তো শ্রমিদের এ কনকনে শীতে আর রাজপথে থাকতে হবে না।
প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সাহানা শারমিন বলেন, ‘তীব্র শীতের মধ্যেও শ্রমিকরা অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ অনশনে ঠন্ডাজনিত কারণে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়েছে। যা ক্রমেই বাড়ছে।’ পাটকল সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ‘গত রমজান মাসে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের কোনও চুক্তিই বাস্তবায়ন হয়নি। এর ফলে ৩১ ডিসেম্বর ডিসি বৈঠক আহ্বান করলে নেতারা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।’ পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহালসহ ১১ দফা দাবিতে ২৯ ডিসেম্বর বেলা ২টা থেকে অনশন শুরু করেন পাটকল শ্রমিকরা।