ইছামতি নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে শার্শার শতাধিক একর জমির ফসল

0

মনিরুল ইসলাম মনি, শার্শা (যশোর) ॥ শার্শা উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতের ইছামতি নদীর উজানের পানিতে কয়েক শ একর ফসলের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ শ কৃষক ও মৎস চাষি। পানিতে সীমান্ত এলাকার প্রায় অর্ধশত গ্রামের কাঁচা মাটির রাস্তা চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।

সম্প্রতি বৃষ্টি ও ভারতের ইছামতি নদী থেকে আসা অতিরিক্ত পানিতে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে গ্রামীণ জনপদে। বিশেষ করে উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম দাউদখালি, রুদ্রপুর, গোগা, কায়বা, ভুলোট, পুটখালী, দৌলতপুর, বড়আঁচড়া, সাদীপুর, রঘুনাথপুর, সরবানহুদা, ঘিবা, ধান্যখোলা, বাহাদুরপুর, শিকারপুর, শালকোনা, শিববাসসহ অনেক এলাকায় ফসলি জমি ভেসে ছয়লাব হয়ে গেছে। সেই সাথে হাঁটু কাদার সৃষ্টি হয়েছে কাঁচা রাস্তা ঘাটে। ক্ষতি হয়েছে এসব এলাকার পুকুর, মাছের ঘের, বাঁওড় ও মাছ চাষের জলাশয়।

সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দেখা গেছে এ বছর ভারত সীমান্তের ইছামতি নদীর পানি ঢুকে প্লাবিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে উপজেলার কায়বার সাহেবের খাল ও সরবান হুদার কোদলার খাল দিয়ে বেশি ভারতীয় পানি প্রবেশ করছে। এ কারণে সীমান্তে বসবাসকারী অনেকের বাড়ির উঠানে হাঁটু পানি জমে গেছে। সেই সাথে পাকা সড়কের ওপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় গ্রামীণ অবকাঠামো রাস্তা-ঘাটের চরম ক্ষতিসাধন হয়েছে। অনেক মৎস চাষির লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।

এ ব্যাপারে দৌলতপুর গ্রামের কৃষক তাজউদ্দিন মোল্লা জানান, একটানা বৃষ্টি ও ভারতের ইছামতি নদীর পানি প্রবেশ করে আমাদের চরম ক্ষতি হয়েছে। এই মাঠে আমরা চাষাবাদ করে থাকি। আমন ধান রোপণ করেছিলাম। মাঠে কৃষকের আমন ধান ছিল কয়েক শ একর জমিতে। সব পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এখন পথে বসা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নাই।

এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি সদস্য লিয়াকত হোসেন জানান, উপজেলার পুটখালী গ্রামে অনেক মাছের ঘের ভেসে মাছ বেরিয়ে গেছে। একাধারে বৃষ্টির পানি অন্যদিকে ভারতের পানি আমাদের জমিতে আসা সব মিলিয়ে মাছের ঘের, ফসলের মাঠ যেমন ভেসেছে তেমনি জমির বীজতলারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শার্শার কায়বা এলাকায়ও ইছামতি নদীর পানিতে ফসলি জমিসহ ঠেঙ্গামারী ও আওয়ালী বিল এলাকার ৫শ একরের বেশি ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, চলতি বছর অতিবর্ষণে ও শার্শা সীমান্ত এলাকার ভারতের ইছামতি নদীর পানি এলাকায় প্রবেশ করে অনেক ক্ষতি হয়েছে। সীমান্ত এলাকার ক্ষতির বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদফতর পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।