রোজার আগেই বাড়ল ডাল সয়াবিন তেল ও গরুর মাংসের দাম

0

-শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন-
রমজানের আগেই যশোরে সব ধরনের ডালের দাম বেড়েছে। বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেল, মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে সহজলভ্য হয়েছে সবজি,আলু ও পেঁয়াজ। ভোক্তারা বলছেন গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসায়ীরা রোজার আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে আসছেন। তাদেও দাবি এখনই বাজার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হোক। শুক্রবার যশোর শহরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
রমজানের আর মাত্র দেড় মাস বাকি আছে। এরই মধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা রোজাকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো শুরু করে দিয়েছেন। বড় বাজারে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে খেসারির ডালের কেজিতে ১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ছোলার ডালে ১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, দেশি চিকন মসুর ডালে ৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতা ‘আয়াশ স্টোরের’ স্বত্বাধিকারী কামাল আহম্দে জানান, পাইকারি বাজারে সব ধরনের ডালের দাম বেড়ে গেছে।
এদিকে বাজারে এখনও পর্যাপ্ত সরবরাহ করা হয়নি বোতলজাত সয়াবিন তেল। তবে দোকানিদের অভিযোগ কোম্পানি থেকে তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য কিনলে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু দোকানিরা কোম্পানি থেকে বাধ্যতামূলক পণ্য কেনা বাদ দিয়ে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করে চলেছেন। শুক্রবার বড় বাজারে খুচরা তেল বিক্রেতা রবি ব্যানার্জি জানান, গত সপ্তাহের থেকে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা। তিনি আশঙ্কা করছেন, সামনের দিনগুলোতে সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়বে।
বড় বাজার কাঠেরপুলে গত সপ্তাহেও গরুর মাংস রেটবোর্ড টাঙিয়ে প্রতি কেজি ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিক্রেতারা প্রতি কেজি গরুর মাংসে ৫০ টাকা বাড়িয়ে রেটবোর্ডে ৭৫০ টাকা উল্লেখ করে বিক্রি করছেন। কাঠেরপুলে মাংস বিক্রেতা রাজ বিফ হাউজের স্বত্বাধিকারী মো. আব্বাস জানান বর্তমানে হাটে গরুর দাম বেড়ে গেছে।
ক্রেতা শফিকুল ইসলাম জানান, এভাবে লাগাম ছাড়া মাংসের দাম বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন বিক্রেতারা শুধুমাত্র বাজার তদারকির অভাব্।ে তিনি আরও বলেন, সরকারি পদক্ষেপ না থাকায় রোজার দেড় মাস আগে থেকেই সব ধরনের ডালে দাম বাড়ানো শুরু করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
বাজারে চালের দাম অপিরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার খুচরা পর্যায়ে বাংলামতি চাল প্রতি কেজি ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা, মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭২ টাকা, সুবললতা চাল ৬৮ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, বিআর-৬৩ চাল ৫২ থেকে ৭৪ টাকা, স্বর্ণা চাল ৫২ টাকা ও হীরা চাল ৪৯ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
তবে বড় বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ সবজি, আলু ও পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় দামও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এসেছে। শুক্রবার ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা ১০ টাকা করে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। শিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি, ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজের কালি। ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে শসা, বেগুন, ও গাজর।
বড় বাজারের খুচরা বিক্রেতা বিকাশ সাহা জানান, তিনি এদিন আলু প্রতি কেজি ২৫ টাকা, মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, আদা ১০০ টাকা ও রসুন ২৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
রমজানের আগেই রোজার উপকরণ য়েমন বিভিন্ন ডাল, সয়াবিন তেল ও গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর যশোরের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনীম লোকসমাজকে জানান, তারা সব সময় বাজারের দিকে নজর রাখছেন, কোনো অসাধূু ব্যবসায়ী যেন রোজাদারদের জিম্মি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে না পারেন সেজন্য বাজার তদারকি জোরদার করা হচ্ছে।