চারণকবি বিজয় সরকারের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল

0
চারণকবি বিজয় সরকার

সুলতান মাহমুদ,নড়াইল ॥ চারণকবি বিজয় সরকারের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৪ ডিসেম্বর)। অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুরস্রষ্টা কবিয়াল বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নবকৃষ্ণ অধিকারী এবং মা হিমালয়া দেবী।

শিল্পকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও চারণকবি বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে সকাল ১০টায় বিজয়গীতি প্রতিযোগিতা, বেলা ৩টায় কবিতা আবৃত্তির আসর,৪টায় উন্মুক্ত বিজয়গীতি পরিবেশনা, সন্ধ্যা ৬টায় কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ। পরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

চারণকবি বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এস,এম আকরাম শহীদ চুন্নু জানান, একুশে পদকপ্রাপ্ত চারণকবি বিজয় সরকারের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

অজপাঁড়াগায়ে জন্মগ্রহণ করেও তিনি (বিজয় সরকার) লোকসঙ্গীত ও কবিগান রচনা করে ও গেয়ে সবার মাঝে আলো ছড়িয়েছিলেন। তাঁর রচিত আধ্যাত্মিক গান আজও সবার মনেপ্রাণে নাড়া দেয়। গান রচনার মধ্য দিয়ে তিনি সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করার চেষ্টা করেছিলেন। আমাদের সবাইকে যে একদিন পরপারে পাড়ি দিতে হবে সেকথাটিও তিনি গানের মাঝে সবাইকে বুঝিয়েছেন।

বিজয় সরকারের ভক্তরা তার গানের স্বরলিপি সংরক্ষণ, ডুমদিতে বিজয় স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ ও নড়াইলে বিজয় সরকারের নামে ফোকলোর ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানিয়েছেন।

বিজয় সরকার নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, মতান্তরে মেট্রিক পর্যন্ত পড়েছেন। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের গানসহ প্রায় ১৮শ গান লিখেছেন তিনি। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কি ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন। ‘পাগল বিজয়’ হিসেবে সমধিক পরিচিত ছিলেন তিনি।

১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর বার্ধ্যকজনিত কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়ার বেলুড়ে পরলোকগমন করেন। পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়।