যশোরের ১২ সমকামী শিক্ষার্থী এইডস আক্রান্ত, নতুন শনাক্ত ২৫ রোগী

0

বিএম আসাদ ॥ যশোরে চলতি বছর ২৫ জন এইচআইভি এইডস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১২ জন শিক্ষার্থী। যারা প্রত্যেকেই সমকামী। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডা. হারুন অর রশিদ। গতকাল মঙ্গলবার হাসপাতাল কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এইচআইভি এইডস বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালায় তিনি এ তথ্য দেন। তিনি জানান, সাধারণত অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত শ্রমিক শ্রেণির মানুষরা এইডস রোগী হিসেবে সনাক্ত হতো। এই প্রথমবারের মত ছাত্রদের আক্রান্তের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
এ চিত্র ভয়াবহ উল্লেখ করে ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, অনিয়ন্ত্রিত যৌনতা নিয়ন্ত্রণে সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। এ কাজে ধর্মীয় নেতাদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
জেলা পর্যায়ের এ কর্মশালায় বক্তারা বলেন, দেশে বর্তমানে এইডস রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার। ১০ হাজার পরীক্ষা-পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগী শনাক্ত হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আক্রান্তদের শতকরা ৯৫ ভাগ চিকিৎসার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
সেভ দ্য চিল্ড্রেনের সহযোগিতায় পিএলএইচআইভি নেটওয়ার্ক (পিএন প্লাস) এবং আশার আলো সোসাইটি (এএএস) এ কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালায় জানানো হয়, সম্প্রতি সমকামীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে বেশি খোলামেলা চলাফেরা করছে এবং যততত্র আড্ডা দিচ্ছে। যেখানে বাঁধা দেয়ার কেউ নেই। শিক্ষার্থীরা পূর্বের তুলনায় বেশি স্বাধীন চলাচলের অভ্যস্থ হচ্ছে। এক ধরনের পাশ্চ্যত্য ভাবধারায় তারা চলাফেরা করছে। এতে করে সমাজ এক ভয়াবহতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
কর্মশালায় পিএন প্লাস এর জেনারেল সেক্রেটারি মো. হাফিজউদ্দিন মুন্না তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হারুন-অর-রশীদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. তানভীর নাহিদ, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. ইউসুফ আলী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মো. আসলাম হোসেন, যশোর কোতয়ালি থানার ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাক, রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, ডা. মো. আনোয়ার হোসেন, এএএসের কর্মকর্তা মো. ইসতিয়াক আহমেদ, তানভীর নাহিদ, দৈনিক লোকসমাজের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার বিএম আসাদ, ড্রাগ ইউজার নেটওয়ার্ক সুকতারার কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম, হাসপাতাল সমাজসেবা কর্মকর্তা শান্তা শ্যামলী মনিষা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে উঠা-বসা দোষের নয়। তাদের সাথে সঙ্গ দেয়া যায়। এ ধরনের রোগী নিয়মিত চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। অন্যের ব্যবহার করা সিরিঞ্জ থেকেও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ অবস্থায় নতুন করে এইডস প্রতিরোধে কর্মশালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়ে বলা হয় যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে বর্তমানে এআরটি সেন্টার খোলা হয়েছে। সেখানে এইডস রোগীদের চিকিৎসা চলছে।