শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী ভর্তি করলেই স্থানান্তর

0
এস কে সিরাজ শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) ।। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে সাতক্ষীরার সুন্দরবন উপকূলীয় চার লক্ষ মানুষের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। রোগী ভর্তি করলেই স্থানান্তর (রেফার) করা হয় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ অথবা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। চিকিৎসক সংকট ও যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকার কারণে বরাবরই রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
 চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের শামসুর রহমান বলেন ,সকাল ৯ টা থেকে সাড়ে১১টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ডাক্তার  দেখাতে পারিনি। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দেড় থেকে ২০০ রোগী আসলেও হাসপাতালটিতে ডাক্তার সংকটের কারণে  তারা চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। মাত্র চার থেকে পাঁচজন ডাক্তার রোগী দেখে থাকেন, যার কারণে অধিকাংশ রোগী সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসা সেবা না পেয়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
শ্যামনগর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর দেলোয়ারা বেগম বলেন, হাসপাতালটিতে ৩১ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও মাত্র ডাক্তার রয়েছে আট জন, বাকি পদগুলো রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য হয়ে। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। প্যাথলজি বিভাগটি  চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।
তিনি বলেন , রোগী ভর্তি করলেই সাথে সাথে রেফার করা হয় নানা অজুহাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
স্থানীয় সংবাদ কর্মী আলমগীর সিদ্দিক জানান, শ্যামনগর উপজেলা পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ, আশাশুনি ও কয়রা উপজেলা থেকে ও শ-শ রোগী প্রতিদিন শ্যামনগর হাসপাতালে চিকিৎসা  সেবা নেওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু হাসপাতালটি একেবারেই জরাজীর্ণ অবস্থায় চলছে, মানুষ প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী আসাদুজ্জামান লিটন বলেন, হাসপাতালটি ওষুধ কোম্পানির রি-প্রেজেন্টিভ ও দালাল চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এখানে রোগীদের বেড সংকট, খাদ্যের সমস্যা ,ওষুধ সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হাসপাতালটি।
সুন্দরবন উপকূলীয় নীলডুমুর এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সখিনা বেগম বলেন, আমি গরিব মানুষ সে জন্য সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলাম, কিন্তু তিনটি পরীক্ষা দিয়েছে, বাইরে থেকে পরীক্ষাগুলো করতে দুই হাজার টাকার উপরে লেগে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার সংকট রয়েছে, অল্প সংখ্যক ডাক্তার দিয়ে আমরা দিনরাত মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। বেড সংকটের কারণে অধিকাংশ রোগীকে রেফার করা হচ্ছে অন্যত্র। দ্রুত বেড সংকট নিরসন হবে, এছাড়া অন্যান্য সমস্যাগুলো নিরসনের জন্য কাজ করা হচ্ছে, সাধারণ রোগীদের যাতে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হয় সে লক্ষ্যে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।