কালীগঞ্জে ৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লকের কাজ বন্ধ, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

0

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা॥ ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত ওয়াশ ব্লকের কাজ ১ বছরের অধিক সময় বন্ধ রয়েছে। ফলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। বিদ্যালয়গুলোর পুরনো শৌচাগারগুলো ব্যবহার অনুপযোগী। আবার নতুনভাবে তৈরি করা ওয়াশ ব্লকের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় তাও ব্যবহার করতে পারছেন না শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশব্লক নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকলেও এব্যাপারে দায়িত্বশীল উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জেসমিন আরার ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের ব্যাপারটা তিনি আমলেই নেন না । স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ ঠিকাদার কিংবা জনস্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জেসমিন আরাকে বারবার তাদের অসুবিধার কথা অবগত করলেও তিনি দায়সারা বক্তব্য দিয়ে সরে পড়েন। কালীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জহুরা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাতঘরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পার শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাতিবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লকের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
সরজমিনে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থিত আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, নবনির্মিত তিনতলা ভবনের সাথে দ্বিতল বিশিষ্ট একটি ওয়াশ ব্লকের চলমান নির্মাণ কাজ বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বিদ্যালয়টিতে ২২০ জন শিক্ষার্থী এবং ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রত্যেকেই আগের ভাঙাচোরা দুইটি শৌচাগার ব্যবহার করছেন কোনো রকমে। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের শৌচাগার ব্যবহার করতে দাড়াতে হচ্ছে লাইনে। ফলে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওয়াশ ব্লক না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির সকলকে। এ সময় বিদ্যালয়টির চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিথিলা খাতুনের সাথে কথা হলে সে জানায়, শৌচাগার ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় আমি সেখানে যাইনা। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সুবাস মজুমদার বলেন,ওয়াশ ব্লকের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় আমরা বেশ কষ্টে দিন পার করছি। বিদ্যালয়টির পাশে সরকারি রেজিস্ট্রি অফিস হওয়ায় সেখানে আগত সেবা প্রত্যাশীর অনেকেই আমাদের বিদ্যালয়ের পুরাতন ভাঙাচোরা শৌচাগার দুটি ব্যাবহার করেন এবং অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রেখে যান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হাসান (ভারপ্রাপ্ত) জানান, বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে ওয়াশ ব্লকের কাজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের চরম অসুবিধা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।কাজ বন্ধের কারণ জানতে সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লকের কাজ পাওয়া ‘হান্নান মিঠু জয়েন্ট ভেঞ্চার’ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ হান্নানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কালীগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জেসমিন আরার সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, মূলত ঠিকাদারের গাফলতির কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে আমি ঠিকাদারের সাথে কথা বলেছি, তিনি আমাকে জানিয়েছেন আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করবেন। ঠিকাদারের গাফিলতির ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,ওয়াশ ব্লকের কাজ বন্ধ্যের ব্যাপারে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে দ্রুত কাজ শুরু করার ব্যাপারে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।