চৌগাছায় উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে আ.লীগে বিভক্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগ স্পষ্টভাবে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একপক্ষ অবস্থান নিয়েছে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে অপর পক্ষ অবস্থান নিয়েছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে। উপজেলা ও পৌর এলাকার শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ায় চরম বিপাকে আছেন মাঠ পর্যায়ের সাধারণ নেতাকার্মীরা। আর বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে বারবার এক দলীয় নির্বাচনকে দুষছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ।
আর মাত্র একদিন পর ২১ মে মঙ্গলবার চৌগাছা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। শেষ সময়ে এসে ব্যাপক ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। বিশেষ করে নির্বাচনে মাঠে থাকা দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর যেন ঘুম- নাওয়া- খাওয়া বন্ধ । দুই প্রার্থীই দলীয় কর্মী সমর্থক নিয়ে উপজেলার এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। এই নির্বাচন যেন তাদের জন্যে এক ধরনের প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেষ সময়ে এসে প্রার্থীরা দলীয় পদ পদবিতে থাকা নেতাদের নিজের কাছে ভেড়াতে চলাচ্ছেন চেষ্টা- তদবির।
বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি- জামায়াতের বেশ কিছু ভোটার ভোট কেন্দ্র যাওয়ায় একপক্ষ বেশ লাভবান হয়। কিন্তু এবারের নির্বাচনে ওই দল দুটির কোনো কর্মী সমর্থক যাবেন না ভোট কেন্দ্রে। ইতোমধ্যে তারা ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি তার পক্ষে জনমত গঠনে মাঠে কাজ করছেন। বিএনপি- জামায়াত ভোট কেন্দ্রে না গেলে ক্ষমতাসীন দলের দুই প্রার্থী নিজ দলের ভোটারদের যত বেশি নিজের পক্ষে নিতে পারবেন সেই হবেন বিজয়ী-এমন ভাবনা হতে উভয় প্রার্থী দলের কর্মী -সমর্থক নিজের পক্ষে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড.এম মোস্তাানিছুর রহমান। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান। ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে সকলকে তাক লাগিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান। সে সময় মোট ভোট পড়ে ৯২ হাজার ৩ শ ৬৪টি। এরমধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. এম মোস্তানিছুর রহমান পান ৫৬ হাজার ৮ শ ৩৮ এবং আনারস প্রতীকে এস এম হাবিবুর রহমান পান ৩৫ হাজার ৫ শ ২৬ ভোট। ২১ হাজার ৩ শ ১২ ভোটে হেরে যান হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান।
অপরদিকে প্রায় পাঁচ যুগ ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম হাবিবুর রহমান। ২০০২ সালে ক্লিনহার্ট অপারেশনে গ্রেফতার হন তিনি। বলাচলে পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা তিনি। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এবার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নেই। ফলে দুজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সমানে সমান লড়াই হবার সম্ভবনা দেখছেন দলটির অনেক নেতাকর্মী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের একাধিক আওয়ামী লীগ কর্মী- সমর্থক জানান, দলের নেতারা এখন প্রকাশ্যে দুই ভাগে বিভক্ত। একপক্ষ এসে ভোট চেয়ে যাওয়ার পরপরই আসছে অন্য পক্ষ। বেশ সমস্যায় আছি আমরা। চিন্তা ভাবনা করার এখনও সময় আছে। শেষমেষ হয়ত ভোটের দিন বাড়ি ছেড়ে আত্মীয় -স্বজনের বাড়িতে উঠতে হবে।