বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমছে না বৃদ্ধির তালিকায় যোগ হয়েছে আরও

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। অস্থির নিত্যপণ্যের বাজারে আরও এক দফা বেড়েছে ডিমের দাম। নতুন করে বেড়েছে আলুর দামও। নতুন ধানের চাল বাজারে উঠলেও দাম কমেনি। ভালোমানের সবজির দামও আকাশচুম্বি। মাছের বাজারও চড়া। খামারের ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকার ওপরে। বিক্রেতারা তাদের নির্ধারণ করা বর্ধিত দামেই এখনও গরুর মাংস বিক্রি করছেন। গতকাল শুক্রবার যশোরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
শুক্রবার বড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খামারের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস সাড়ে ১২ টাকা। গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছিল ১২ টাকা দরে। খুচরা ডিম বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা বাবলা জানান, খামারে ডিমের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। চাহিদামত তারা যোগান দিতে পারছে না।
বাজারে খামারের ব্রয়লার মুরগির দামও ২০০ টাকার ওপরে। শুক্রবার বড় বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৬০ টাকা ও লেয়ার মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা। বড় বাজারের খুচরা বিক্রেতা ইমরান হোসেন জানান, তীব্র তাপপ্রবাহে মুরগির উৎপাদন কমে গেছে। সামনে কুরবানি পর্যন্ত মুরগির দাম এরকমই থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে, বড় বাজার কাঠেরপুলের বিক্রেতারা গত দু মাস আগে সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৪৪ টাকা দর উপেক্ষা করে তাদের নির্ধারণ করা দামেই বিক্রি করে চলেছেন। শুক্রবার কাঠেরপুলে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে ।
মাছের বাজারও চড়া। বড় বাজার মাছবাজারের খুচরা বিক্রেতা মীর রিয়াজুল আলম রোকন জানান, বর্তমানে বিল ও ঘেরে চাষ করা বিভিন্ন জাতের মাছ যশোরে আসছে। শুক্রবার এক কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা, দেড় কেজি রুই বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা, তিন কেজি ওজনের রুই বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা, চার পিস কেজি গলদা চিংড়ি ১৪শ টাকা, ১০ পিস গলদার কেজি ১২শ টাকা, তেলাপিয়া ১৭০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস মাছ ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, বেলে মাছ ১০০০ টাকা ও পুঁটি মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
নতুন করে আলুর বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। খুচরা বিক্রেতা জয়দেব সাহা জানান, তিনি গতকাল শুক্রবার থেকে প্রতি কেজি আলু ৫৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এর আগে বিক্রি হচ্ছিল ৫০ টাকায়। বড় বাজার কালীবাড়ি মার্কেটের আড়তদার বাগান চন্দ্র সাহা জানান, কৃষকের গোলায় মজুত করা আলু শেষ হয়ে এসেছে। এখন বাজারে আসবে কোল্ডস্টোরেজে রাখা আলু। তাই দাম কমার সম্ভাবনা তিনি দেখছেন না বলে জানান।
বাজারে নতুন ধানের চাল উঠেছে। কিন্তু দাম কমেনি। যশোর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভপতি সুশীল কুমার বিশ^াস জানান, হাট-বাজারে এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান ওঠেনি। কুরবানি ঈদের আগে চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। শুক্রবার বড় বাজার চালবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি বাংলামতি চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৭২/৭৪ টাকা, মিনিকেট ৫৬/৬০ টাকা, কাজললতা ৫৬/৫৮ টাকা, বিআর-৬৩ চাল ৬৪/৬৮ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫৪/৫৬ টাকা, বিআর-৪৯ চাল ৫২ টাকা ও নূরজাহান চাল ৪৭/৪৮ টাকা ।
গ্রীষ্মকালীন ভরা মৌসুমেও বাজারে সবজির দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। বড় বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা নাসির আলী জানান, শুক্রবার তিনি ভালোমানের উচ্ছে ও করোলা বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বেগুন ৭০/৮০ টাকা, পেঁপে ৬০/৭০ টাকা, সজনেডাটা ১২০/২০০ টাকা, কাঁচ মরিচ ১৮০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, শসা ৬০/৭০ টাকা, বরবটি ৬০/৭০ টাকা।