যশোরে ডিশ ব্যবসায়ী আতাউর হত্যায় জড়িত সন্দেহে ‘দাঁতাল’ বাবু আটক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের আরবপুরে ডিশ ব্যবসায়ী আতাউর রহমান হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ১৫ মামলার আসামি কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাইদুজ্জামান বাবু ওরফে দাঁতাল বাবুকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আরবপুর বিমানবন্দর সড়কের নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি একই এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাক ওরফে হাশেম আলী বিশ্বাসের ছেলে।
ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, ২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে আরবপুর বিমানবন্দর সড়কে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ডিশ ব্যবসায়ী আতাউর রহমান। তিনি সদর উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের ফিরোজ হায়দারের ছেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনেরা। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ এপ্রিল সকালে মারা যান আতাউর রহমান। এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফিরোজ হায়দার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। এরপর মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২১ মার্চ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর হারুন অর রশিদ।
বাদী ফিরোজ হায়দার এই চার্জশিটের ওপর আদালতের নারাজি জানালে বিচারক মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে আদেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ মামলটি তদন্ত করছে। তিনি আরও জানান, আতাউর রহমান হত্যার সাথে সাইদুজ্জামান বাবু ওরফে দাঁতাল বাবুর সম্পৃকতা রয়েছে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ কারণে তাকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তার রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ডিশ ব্যবসায়ী আতাউর রহমান হত্যা মামলায় সিআইডি পুলিশ ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। অভিযুক্তরা হচ্ছেন, শহরের শংকরপুর মুরগির ফার্ম গেট এলাকার মৃত কিনাই চৌধুরীর ছেলে কবির চৌধুরী, খড়কি শাহ আব্দুল করিম রোডের আনোয়ার পারভেজ, আরবপুর বিমান বন্দর সড়কের মৃত আব্দুর রাজ্জাক ওরফে হাশেম আলী বিশ্বাসের দুই ছেলে সাইফুজ্জামান শামীম ও আক্তারুজ্জামান রিপন, আরবপুর রেললাইন এলাকার মৃত মসলেম উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে আমিনুল ইসলাম বাদল, আরবপুর মোড় এলাকার মৃত বশির বিশ্বাসের ছেলে রফিকুল ইসলাম, মৃত শহর আলী মোড়লের ছেলে কামাল হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেন, আরবপুর রেললাইন এলাকার আব্দুল মালেক হাওলাদারের ছেলে আমিনুর রহমান বিষে, আরবপুর মোড় এলাকার কওছার আলী বিশ্বাসের ছেলে আলমগীর হোসেন, আরবপুর ঋষি পাড়ার নারদ দাসের ছেলে শিমুল দাস, খোলাডাঙ্গা গনি পাড়ার সুলতানুজ্জামানের ছেলে শাহাবুদ্দিন রুহিন ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে রিংকু। এর মধ্যে সাইদুজ্জামান শামীম ও আক্তারুজ্জামান রিপন সন্ত্রাসী সাইদুজ্জামান বাবু ওরফে দাঁতাল বাবুর ভাই এবং রিংকু ভাগ্নে।
সিআইডি পুলিশের তদন্তে উঠে আসে যে, আতাউর রহমান বিমান বাহিনী থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স নিলামে কেনেন। এই অ্যাম্বুলেন্স মেরামত করে আতাউর রহমান ও অভিযুক্ত আক্তারুজ্জামান রিপন ব্যবসা করতেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সটি আক্তারুজ্জামান রিপন নিজ নামে স্ট্যাম্প করে নিতে চেয়েছিলেন। রাজি না হওয়ায় আক্তারুজ্জামান রিপন সহযোগীদের নিয়ে আতাউর রহমানকে গুলি করে হত্যা করেন।