সময় এসেছে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের : বেনজীন খান

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রাচ্যসংঘের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক বেনজীন খান বলেছেন, পৃথিবীর ৫৭টি দেশ মুসলিম দেশ। অথচ এই ৫৭টি দেশের কোথাও ফিলিস্তিনে যে ইসরায়েলি বর্বরতা, হত্যাযজ্ঞ হচ্ছে তার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ নেই, মিছিল নেই।
অথচ ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডার মতো রাষ্ট্রের ভিন্ন ধর্মের লাখ লাখ মানুষ এ পৈশাচিক বর্বর ঘটনার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। তারা প্রতিনিয়ত রাজপথে মিছিল করে নারী ও শিশু হত্যাসহ সকল বর্বরতার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। দুঃখজনক হচ্ছে ইরান যখন ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তখন একশ্রেণির মুসলমান শিয়া-সুন্নি ইস্যুতে নানা বিতর্ক ছড়াচ্ছে। মুসলমানদের ভেতরে বিভেদ ও বিতর্ক সৃষ্টি করছে। তাই সময় এসেছে মুসলমানদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।
বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর শহরের দড়াটানা ভৈরব চত্বরে প্রাচ্যসংঘ যশোরের আয়োজনে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রগঠন ও ইসরায়েলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান আলোচকের ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। প্রাচ্যসংঘের সভাপতি কবি কাসেদুজ্জামান সেলিমের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক আহসান কবীরের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাচ্যসংঘের সদস্য প্রফেসর কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস।
বিক্ষোভ সমাবেশে বেনজীন খান তার দীর্ঘ বক্তৃতায় আরও বলেন, বর্বর রাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুরা হচ্ছে একটি অভিশপ্ত জাতি। তাদের পূর্ব পুরুষরা আমাদের অনেক নবী ও রাসুলকে হত্যা করেছে। তারা ইসলামের চির শত্রু । সেই কারণে তারা ভূমিহীন বিতাড়িত। তারা পৃথিবীর কোথাও দাঁড়াতে পারেনি। তারা পৃথিবীর যেখানে গেছে সেখানে মানুষের ওপর অত্যাচার বর্বরতা চালিয়েছে। আজও তারা পৃথিবীতে মুসলমান জাতির ওপর অত্যাচার করছে। এখন ফিলিস্তিন ভূখন্ড থেকে আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে এ হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। তাই অভিশপ্ত এ জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার সময় এসেছে। নইলে এরা যতোদিন পৃথিবীতে থাকবে ততোদিন মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাবে। রক্তের হলি খেলা খেলেই যাবে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে মুসলামানদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে, এর একটি বড় কারণ হচ্ছে শয়তানরা মুসলমানদের ভয় পায়। কেননা মুসলমানরা পার্সোনাল প্রপার্টিকে অস্বীকার করে, সঞ্চয়কে অস্বীকার করে, সাদা-কালো, বর্ণতা, ধনী-গরিবকে অস্বীকার করে। যা এমন এক জীবনবোধ যা ওই লোভী শাসক, লুটেরাদের জীবনবোধ অর্থনীতির পরিপন্থী। এজন্য তারা মুসলমানদের সহ্য করতে পারছে না।
তিনি বলেন, যারা সাদাকে সাদা বলে, কালো কে কালো বলে, অন্যায় অবিচার, জুলুম নির্যাতন সর্বোপরি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ্ প্রতিবাদ করে, একমাত্র আল্লাহর কাছে ছাড়া কারোর কাছে নতজানু হয় না তারাই মুসলমান। অথচ আমরা যারা দাঁড়ি-টুপি পরে মসজিদে নামাজ আদায় করি অথচ সমাজের অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই না, মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারি না, তারা কখনও মুসলমান দাবি করতে পারি না। তাই এই মুহূর্তে প্রতিটি মুসলমানকে ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও মজলুম নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সমাবেশ থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠন ও ইসরায়েলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
সমাবেশের আগে প্রাচ্যসংঘের প্রাচ্য অ্যাকাদেমির শিল্পীরা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত ও কবিতা আবৃত্তি করে। সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।