সুসংবাদের বার্তাবহ আলবিদা রমজান

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুরু হলো নাজাতের দশ দিন। আজ সিয়াম সাধনার ২১তম দিন। মুমিনের হৃদয়ের অলিন্দে বিদায়ের সুর অনুরণিত এখন। ক্রমাগত প্রান্তসীমার দিকে ধাবমান মাহে রমজান। গেল সন্ধ্যা থেকে রমজানের সার্বিক বরকত হাসিলের উদ্দেশ্যে এলাকার মসজিদে মসজিদে ইতিকাফে বসেছেন বহু মুমিন বান্দা।
তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টিলাভ। যার একমাত্র গন্তব্য পবিত্র জান্নাত। আটখানা জান্নাত সুসজ্জিত মুমিন, মুত্তাকিকে সাদর সম্ভাষণ জানাতে। আছে সদর দরোজায় দাঁড়িয়ে রিদওয়ান। এ কারণে এক পরম সৌভাগ্যের রজনী উপহার দেওয়া হয়েছে মুসলিম উম্মাহকে। যাকে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলা হয়েছে কুরআনে। এই রজনি তালাশ করতে হবে প্রত্যেককে ইবাদতের মাধ্যমে। এটা সকলে পরিজ্ঞাত, জ্বিন আর মানবম-লিকে একমাত্র সৃষ্টি করা হয়েছে রাব্বুল আলামিনের ইবাদতের জন্যে। তাই আসুন ইবাদতে গুজরান হোক আমাদের বাকি কটা রমজান। আমরা এখানে একুশে রমজান লাইলাতুল কদর তালাশ করা সম্পর্কিত হাদিস উদ্ধৃত করছি।
শিক্ষা ও মাসায়েল: এক. ইলম অন্বেষণের জন্যে সফর করা এবং উপর্যুক্ত স্থান ও সময়ে আলেমদের জিজ্ঞাসা করা। দুই. শিক্ষকদের কর্তব্য ছাত্রদের সুযোগ দেওয়া, যেন তারা সুন্দরভাবে প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে। তিন. নামাজির চেহারায় সিজদার সময় যে ধুলা-মাটি লাগে তা দূর করা উচিত নয়, তবে তা যদি কষ্টের কারণ হয়, সালাতের একাগ্রতা নষ্ট করে, তাহলে মুছতে সমস্যা নেই। মাটিতে সিজদা দেওয়া ও সালাত আদায় করা বৈধ। চার. নবী [সা.] মানুষ, তিনি মানুষের মত ভুলে যান, তবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে যা পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছেন তা ব্যতীত, কারণ সে ক্ষেত্রে আল্লাহ তাকে ভুল থেকে হিফাজত করেন। নবীদের স্বপ্ন সত্য, তারা যেভাবে দেখেন সেভাবে তা ঘটে। পাঁচ. নবীর [সা.] লাইলাতুল কদর দেখার অর্থ তিনি তা জেনেছেন, অথবা তার আলামত দেখেছেন। আবু সায়িদ [রা.] থেকে ইমাম বুখারি বর্ণনা করেন: জিবরিল তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, লাইলাতুল কদর শেষ দশকে। ছয়. আলেম যদি কোনো বিষয় জানার পর ভুলে যায়, তাহলে সাথীদের বলে দেওয়া ও তা স্বীকার করা। সাত. এ হাদিস প্রমাণ করে যে, রমজানে ইতিকাফ করা মুস্তাহাব। তবে প্রথম দশক থেকে মধ্যম দশক উত্তম, আবার মধ্যম দশক থেকে শেষ দশক উত্তম। আট. জনসাধারণের উদ্দেশে ইমামের খুতবা দেওয়া ও তাদের জরুরি বিষয় বর্ণনা করা বৈধ। নয়. এ হাদিস প্রমাণ করে যে, নবী [সা.] উম্মতকে তাদের কল্যাণের বস্তু জানানোর জন্যে উদগ্রীব ছিলেন। লাইলাতুল কদর তালাশে তিনি ও তার সাহাবিগণ সচেষ্ট থাকতেন। দশ. রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করার ফজিলত, বরং সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, যেহেতু নবী [সা.] কখনো তা ত্যাগ করেননি। এগারো. লাইলাতুল কদর শেষ দশকে, বিশেষ করে বেজোড় রাতগুলোতে, আরও বিশেষ একুশের রাত। বারো. সিজদায় কপাল ও নাক স্থির রাখা ওয়াজিব, যেরূপ নবী [সা.] রেখেছেন। তেরো. এ হাদিস প্রমাণ করে যে, নবীর [সা.] যুগে মুসলিমগণ দুনিয়ার সামান্য বস্তু ও সাধারণ জীবন-যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। তাদের মসজিদ ছিল খেজুর পাতার, যখন বৃষ্টি হত, সালাতে থাকা অবস্থায় তাদের ওপর বৃষ্টির পানি ঝরে পড়ত। চৌদ্দ. একুশে রমজানের ফজিলত, এটা সম্ভাব্য লাইলাতুল কদরের রাত, অতএব এ রাতে অবহেলা করা মুসলিমদের উচিত নয়।