রামনগরে চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, পিতা-পুত্রসহ আটক ৪

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে লোহার রড চুরির অপবাদ দিয়ে ফয়জুর ইসলাম (২৫) নামে এক যুবককে আটকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের তোলা গোলদার পাড়ায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে। গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত ওই যুবকের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছিলো। স্থানীয় লোকজন এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। এ সময় পুলিশ নির্যাতনে ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করেছে।
নিহতের পিতা তোলা গোলদার পাড়ার বাসিন্দা জালাল উদ্দিন জানান, তার ছেলে ফয়জুর স্থানীয় ভৈরব ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতো। গত শনিবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে একই এলাকার আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তি এসে খবর দেন যে, তার ছেলে ফয়জুর তোলা গোলদার পাড়ার একটি গাড়ির ওয়ার্কশপে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। সেখানে একই এলাকার আব্দুল্লাহ এবং তার ছেলেরা তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করছেন। এ খবর পেয়ে জালাল উদ্দিন সেখানে গিয়ে তার ছেলে ফয়জুরকে ফেরত চান। কিন্তু তার ছেলে গুরুতর জখম হলেও তাকে ফেরত দেওয়া হয়নি। আব্দুল্লাহ এবং তার ছেলেরা তাকে জানান যে, ফয়জুর লোহার রড চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। তার অন্য সঙ্গীদের আটক না করা পর্যন্ত তারা ফয়জুরকে ছাড়বেন না। পরে জালাল উদ্দিন সেখান থেকে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে রোববার দুপুরে জালাল উদ্দিন জানতে পারেন, তার ছেলের লাশ যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এ খবর পেয়ে তিনি হাসপাতাল মর্গে এসে ছেলের লাশ দেখতে পান। তিনি অভিযোগ করেন, তার ছেলে চুরির সাথে জড়িত নয়। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হাতুড়ি পেটা করে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।
হাসপাতালে পুরুষ সার্জরি ওয়ার্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসক অনিক জানান, গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির আধাঘন্টা পর যুবকের মৃত্যু হয়।
তোলা গোলদার পাড়ার বাচ্চু নামে এক যুবক জানান, অভিযুক্ত আব্দুল্লাহকে রোববার ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে আব্দুল্লাহর দুই ছেলে আমির হামজা ও রাকিবুল এবং একই এলাকার ছব্বির নামে আরও একজনকে তোলা গোলদার পাড়া থেকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এ সময় পুলিশ আব্দুল্লাহর বাড়ি থেকে নির্যাতনে ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করেছে।
কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, ফয়জুর নামে এক যুবককে চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুল্লাহসহ কয়েকজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে নিহত ফয়জুরের লাশ রোববার বিকেলে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত আব্দুল্লাহর বাড়ি ভাঙচুর করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই আনছারুল হক জানান, উত্তেজিত জনতা ওই বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছিলো। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।