যশোরে রাতারাতি পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। যশোরে একরাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন ভারতীয় পেঁয়াজ বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি বন্ধ থাকার সুবাদে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের মোকামগুলো থেকে ঢাকা ও সিলেটের মজুতকারীরা প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ কিনে নিচ্ছে। এ কারণে যশোরে পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে। গতকাল শুক্রবার যশোরের বড় বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন রমজানকে সামনে রেখে অধিক মুনাফা লাভের আশায় মজুদদাররা তৎপর হয়ে উঠেছে। তবে ভোক্তারা বলছেন এসব ব্যবসায়ীদের আজুহাত ছাড়া কিছুই না, নতুন করে আবারও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
মাত্র এক রাতের ব্যবধানে যশোরের বড় বাজারে পেঁয়াজের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে শুক্রবার ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেও বাজারে ৯০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায়। আর গত সপ্তাহেও বড় বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
বড় বাজারের খুচরা বিক্রেতা জয়দেব সাহা জানান, তিনি শুক্রবার সকালে স্থানীয় আড়ত থেকে পাইকারি প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০৫ টাকা দরে কিনেছেন। তিনি খুচরা বিক্রি করছেন ১১০ টাকা।
শুক্রবার বড় বাজার এইচএমএম রোডের কালীবাড়ী এলাকার মার্কেটের আড়ত দিপু ভা-ারে পাইকারি ১০৫ টাকা, নিতাই গৌর ভা-ারে ১০২ টাকা, সাহা বাণিজ্যালয়ে ১০০ টাকা ও জম জম বাণিজ্য ভা-ারে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে।
জম জম বাণিজ্য ভা-ারের স্বত্বাধিকারী মো. কামাল উদ্দিন লোকসমাজকে জানান, তিনি শুক্রবার পাইকারি দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮৫ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। তিনি আরও জানান, এলসি না হলে পেঁয়াজের দাম কমবে না।
বড় বাজারের আড়তদাররা জানান,যশোরে চৌগাছা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও পাবনা মোকাম থেকে ব্যাপারিরা পেঁয়াজ এনে বিক্রি করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই ওইসব মোকাম থেকে ঢাকা ও সিলেটের বড় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ কিনে নিয়েছেন। ফলে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের বড় রকমের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তারা আরও জানান, রমজানকে সামনে রেখে ঢাকা ও সিলেটের বড় ব্যবসায়ীরা দেশে একটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. শাহজাহান শুক্রবার লোকসমাজকে জানান, বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র সরকারি পর্যায়ে টিসিবির পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। অন্য সময় ভোমরা বন্দর থেকে যশোরের ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যেত। এখন ভোমরায় কোনো পেঁয়াজ নেই। তিনি আরও জানান, বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি না হওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজের সংকট মিটবে না।
এদিকে. গতকাল শুক্রবার বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসে হোঁচট খেয়েছেন ক্রেতা শুকুর আলী। তিনি বলেন, গত সপ্তাহেও দেশি পেঁয়াজ বড় বাজারে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহে ১০ টাকা বেড়ে আগের দিন বৃহস্পতিবারও ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এমনকী হলো যে এক রাতের মধ্যে বাজারের সব পেঁয়াজ শূন্য হয়ে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে গেল। এজন্য তিনি বাজার সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন। তিনি আরও জানান, এরপরও সরকারি নজরদারি সংস্থাগুলো যদি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তবে রোজায় হয়ত ২০০ টাকায় পেঁয়াজ কিনতে হতে পারে।