লোকসমাজ ডেস্ক॥ শেয়ারবাজারে টেলিযোগাযোগ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রবি আজিয়াটার আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে তিনজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রবি আজিয়াটার আর্থিক দুর্বলতা চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
আর পুরো বিষয়টি তদারকির জন্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা হলেন বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান ও নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, রবি আজিয়াটাকে নিয়ে যে বিশেষ ধরনের নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, তা কোম্পানিটির উন্নয়নে করা হবে। যাতে বহুজাতিক কোম্পানি হিসেবে কোম্পানিটি সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে পারে। এ কোম্পানিতে যেহেতু বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ রয়েছে, সেহেতু তাদের স্বার্থ রক্ষা করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির কোথায় ঘাটতি রয়েছে তা বের করা হবে এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হবে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২১) রবি আজিয়াটার সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.০৭ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২০) কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ছিল ০.০৪ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ০.০৩ টাকা বা ৭৫ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন, ২০২১) রবি আজিয়াটার সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ০.০৯ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে (এপ্রিল-জুন, ২০২০) সমন্বিত ইপিএস ছিল ০.১৩ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ০.০৪ টাকা বা ৩০.৭৬ শতাংশ কমেছে।
চলতি হিসাব বছরের অর্ধবার্ষিক বা ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন, ২০২১) রবি আজিয়াটার সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ০.১৫ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে (জানুয়ারি-জুন, ২০২০) সমন্বিত ইপিএস ছিল ০.১৬ টাকা। সেহিসেবে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস ০.০১ টাকা বা ৬ শতাংশ কমেছে।
এর আগে ২০২০ সালে রবি আজিয়াটার সমন্বিত ইপিএস ছিল ০.৩৩ টাকা। ২০১৯ সালে সমন্বিত ইপিএস ছিল ০.০৪ টাকা। ২০১৮ সালে সমন্বিত ইপিএস ছিল ০.৪৬ টাকা।
এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারবাজারের অন্যান্য কোম্পানি যেভাবে মুনাফা করছে, ঠিক সেভাবে রবি মুনাফা করতে পারছে না। রবির কোন জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে, যে কারণে কোম্পানিটি আর্থিকভাবে ভালো পারফরমেন্স করতে পারছে না। কেন রবি ভালো মুনাফা করতে পারছে না, আমরা সেটা
খুঁজে কোম্পানিটিকে সাহায্য করতে চাই। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
২০২০ সালের শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত হয় রবি আজিয়াটা। কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ‘এন’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ৮৯৫টি। এর মধ্যে চলতি হিসাব বছরের সর্বশেষ ৩১ জুলাই পর্যন্ত উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৯০.০৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১.৭৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮.২২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সোমবার কোম্পানিটির সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৪২ টাকায়।