ময়লা-আবর্জনার স্তুপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে জেলা প্রশাসকের আহ্ববানের পরও হরিজন ও পৌরসভার ভেতর সমঝোতা হয়নি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জেলা প্রশাসকের আহ্বানের পরও হরিজনপল্লীর বাসিন্দা ও যশোর পৌর কর্র্তৃপক্ষ কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। চতুর্থ দিনেও হরিজনপল্লীর সদস্যরা তাদের আন্দোলনেেছড়ে কাজে ফেরেননি।
এদিকে গত চারদিন ধরে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের অনুরোধে আন্দোলনরত হরিজনপল্লীর বাসিন্দারা পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতার জন্যে বৈঠকে বসলেও বেতন বৃদ্ধির দাবি প্রত্যাখান হওয়ায় সমঝোতা ভেস্তে যায়।
বকেয়া বিলের কারণে আবাসস্থলের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় গত তিন দিন ধরে নিজেদের মতো করে বিক্ষোভ করছেন তারা। এর মধ্যে গত তিন দিন তারা শহরের কোন ডাস্টবিন পরিষ্কার করছেন না। বরঞ্চ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ময়লা ঢেলে দিয়ে রাখছেন। এতেকরে শহরজুড়ে আবর্জনাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
যশোর পৌরসভা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিরন লাল সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিজনপল্লীর বাসিন্দারা তাদের পল্লীতে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, বেতন ভাতা বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করতে যান। এ সময় জেলা প্রশাসক তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার অনুরোধ জানালে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবি জানান। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক পৌরসভার মেয়রকে ফোন করে দুইপক্ষের সাথে বসে সমঝোতার কথা বলেন।
হিরন লাল সরকার আরও বলেন, জেলা প্রশাসকের আহবানে তারা পৌরসভার মেয়রের সাথে সমঝোতায় বসতে সম্মতি জানানোর পর পৌরসভার মেয়র তাদেরকে পৌর পরিষদে তার কার্যালয়ে ডেকে নেন। এ সময় সেখানে পৌর কাউন্সিলররা আমাদের কোনো বেতন-ভাতা বাড়াবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। এমনকি আমাদের ছাড়া প্রয়োজনে বাইরে থেকে অন্যদের এনে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হবে বলে জানিয়ে দেন মেয়র। হরিজন শ্রমিক নেতা হিরণ লাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে তারা বৃহস্পতিবার রাতে বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
রাতে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবরাউল হাছান মজুমদারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, হরিজনপল্লীর বাসিন্দারা স্মারকলিপি দিতে গেলে তাদের জনস্বার্থে কাজে ফেরার অনুরোধ জানালে তারা অনেকটা নমনীয় ছিলেন। তারা বেতন বাড়ানোর দাবি জানালে পৌরসভার মেয়রকে বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে বসার আহ্বান জানিয়েছি। মেয়র এ বিষয়ে তাদের সাথে বসবেন বলে জানিয়েছেন।
পরে এ বিষয়ে পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর হরিজনপল্লীর বাসিন্দাদের মধ্যে নেতৃত্ব পর্যায়ের কয়েকজনের সাথে পৌর মেয়রের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমিসহ পৌরসভার ৬ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলাম। হরিজনপল্লীর বাসিন্দারা পৌরসভার মেয়রের কাছে বেতন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে পৌরমেয়র আপাতত বেতন বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দেন।
মোকসিমুল বারী অপু বলেন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করার অন্যায্য দাবিকে সামনে রেখে পৌর পরিষদকে জিম্মি করার পাঁয়তারা করছে তারা। আমরা ইতোমধ্যে বাইরে থেকে শ্রমিক এনে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা শুরু করেছি। হরিজনদের একটি পক্ষ আন্দোলন ছেড়ে কাজে যোগ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন।