যশোরে চালের দাম বাড়ার পর আর কমেনি সব ধরনের ডালে বৃদ্ধি অস্বাভাবিক

0

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ।। বাজারে সব ধরনের চালে মাসখানেক আগে প্রতি কেজিতে ২টাকা দাম বেড়ে আর কমেনি। ডালের দামও অস্বাভাবিকহারে বেড়ে স্থির রয়েছে। তাছাড়া ভরা মৌসুমে সবজির দামও কমার পরিবর্তে কয়েকটিতে আরও বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার যশোরের বড় বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
গত এক মাস আগে যশোরের বড় বাজার চালবাজারে মোটা নূরজাহান চাল বিক্রি হয়েছিল ৪৬ টাকা, কেজিতে ২টাকা বেড়ে মান ও প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা। কাজললতা বিক্রি হয়েছিল ৪৮ থেকে ৫২ টাকা, কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৪ টাকা। বিআর ২৮ ধানের চাল বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকা, কেজিতে ২টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। মিনিকেট বিক্রি হয়েছিল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, কেজিতে ২টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা। বিআর ৬৩ ধানের চাল বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা। বাংলামতি বিক্রি হয়েছিল ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা। এসব চালের দাম বাড়ার পর আর কমেনি। তবে যশোর চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুশীল কুমার বিশ^াস বলেন, দেশের অন্যান্য স্থানের মতো যশোরেও প্রশাসনের তরফ থেকে জোরদার অভিযান চালানো হলে চালের দাম আরও কমে আসবে।
বাজারে ডালের দামও গত মাসে অস্বাভাবিকহারে বাড়ার পর এখনও সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে। গত মাসে মুগ ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল ১৩০ টাকা, কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। দেশি চিকন মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল ১২৫ টাকা, কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। আমদানি করা মোটা ভারতীয় মসুর ডাল বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকা, প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০টাকা।
এদিকে ভরা মৌসুমেও শীতের সবজির দাম কমার পরিবর্তে বেশ কয়েকটিতে বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার বেগুন প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, এক মাস আগেও বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকা। শসা বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, এক মাস আগেও বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকা। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, এক মাস আগে বিক্রি হয়েছিল ৩০ টাকা। লাউ প্রতিটা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, এক মাস আগে ছিল ৬০ টাকা। তাছাড়া অন্যান্য সবজিও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন সরবরাহ কম তাই দাম বাড়তি। সবজির পাইকারি বিক্রেতা ‘মনিরামপুর ভা-ারের’ অন্যতম স্বত্বাধিকারী জহিরুদ্দিন কাজল জানান, শীতের সবজি এখন ভরপুর, তবে যশোরের বাইরে অন্যান্য জেলায় দাম বেশি থাকায় চাষিরা সেখানে বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছেন।
খামারের মুরগির ডিমের দামও প্রতি হালিতে ৪টাকা বাড়ার পর আর কমেনি। বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা। গরুর মাংসও এক মাস আগে বড় বাজার কাঠেরপুলে সব দোকানে ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। বর্তমানে আবার তারাই ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
এছাড়া বড় বাজার মাছবাজারেও সব ধরনের মাছ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দেখা যায় এক কেজি সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০টাকা, দেড় কেজি সাইজের রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা, তিন কেজি সাইজের কাতল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা, ১০টায় কেজি গলদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, ৬টায় কেজি গলদা চিংিড়ি ১২০০ টাকা, হরিণা চিংড়ির কেজি ১০০০ টাকা, ট্যাংরা কেজি ১০০০ টাকা, বাইম মাছ ১০০০ থেকে ১৩০০ টাকা, দেশি পুঁটি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, ৩টায় কেজি তেলাপিয়া ১৬০ টাকা ও ৬টায় কেজি তেলাপিয়া ১৩০ টাকা।
গতকাল শুক্রবার বাজার করতে আসা ক্রেতা মকবুল হোসেন জানান, চাল,ডাল সবজি, মাছ ও গরুর মাংসের দাম বাড়ার পর আর কমেনি। তিনি আরও বলেন সরকারি নজরদারি সংস্থার গাফিলতিতে বিক্রেতারা এসব পণ্যের দাম বাড়ানোর পর আর কমাননি।। বরং বাড়তি দামে বহাল তবিয়তে বিক্রি করে চলেছেন।