যশোরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকায় কিশোর সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কিশোর সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে সোলায়মান হোসেন (৩২) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। এ সময় জসিম শিকদার নামে অপর এক যুবক গুরুতর জখম হয়েছেন। যশোর শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোলায়মান হোসেন একই এলাকার আব্দুল হকের ছেলে। তিনি শহরের রেল রোডের জেস ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের কর্মচারী। অপর আহত জসিম শিকদার বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার নজরুল শিকদারের ছেলে।
আহত জসিম শিকদার জানান, পেশায় তিনি রিকশাচালক। মাগরিবের আজানের আগে তিনি টিবি ক্লিনিক মোড় এলাকায় বসেছিলেন। এ সময় শংকরপুরে মেডিকেল কলেজের পেছন এলাকার কিশোর সন্ত্রাসী মেহেদী ও চাঁচড়া এলাকার আরাফাতসহ ৩/৪ জন এসে তার কাছে ৫শ টাকা দাবি করেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাদের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। তখন তার ফুপু শিউলী সেখানে এসে তাদের বাধা দিলে তারা তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এর পরপরই ওই সন্ত্রাসীরা জসিম শিকদারের নিতম্বে ছুরিকাঘাত করে তার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তার আত্মীয় সোলায়মান হোসেন তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে ওই সন্ত্রাসীরা তার বুকে ও নিতম্বে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, সন্ত্রাসীরা মাদকাসক্ত। তারা তার পূর্ব পরিচিত।
জসিম শিকদারের ফুপাতো ভাই মোহাম্মদ আলো জানান, তার ভাই সোহাগ টিবি ক্লিনিক এলাকায় নৈশ প্রহরীর কাজ করেন। সন্ত্রাসী জনি, আরাফাত ও মেহেদী রাতে এলাকায় ঢুকে মাদক সেবন করলে তারা ভাই সোহাগ তাদের নিষেধ করেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তার ভাই সোহাগকে মারতে আসে। কিন্তু সোহাগকে না পেয়ে তার মামাতো ভাই জসিমকে পেয়ে ছুরিকাঘাত এবং ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। তখন মোহাম্মদ আলোর স্ত্রীর বড় ভাই সোলায়মান এগিয়ে গিয়ে জসিমকে রক্ষার চেষ্টা করেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকেও ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয় লোকজন আহত সোলায়মান ও জসিমকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন সোলায়মানকে। মোহাম্মদ আলোর অভিযোগ, একই এলাকার সিরাজুল ও শরিফুলের ইন্ধনে সন্ত্রাসীরা ওই হামলা চালায়।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসিব মো. আলী হাসান জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটের দিকে সোলায়মানকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিলো। তার বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, গত ২৩ জানুয়ারি কোতয়ালি থানার এএসআই টমাস মন্ডল এলাকার শহিদুল ও শাহিনকে ইয়াবা ট্যাবলেট এবং টাকাসহ আটক করেন। তাদের আটক করায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী চক্র জসিমকে পুলিশের সোর্স হিসেবে সন্দেহ করে। এ কারণে মাদক ব্যবসায়ীদের ইন্ধনে সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালিয়েছিলো।
এ দিকে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান এবং কোতয়ালি থানার ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাক হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। তারা আহত জসিমের সাথে কথা বলেন।
অপরদিকে হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকেরা ওসি মো. আব্দুর রাজ্জাকের এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।