দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র ও নির্বাচন বিষয়ক সেমিনার সব দলের অংশগ্রহণে দ্বাদশ নির্বাচনের আশা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সব দলের অংশগ্রহণে দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে- দৃঢ়তার সঙ্গে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে- তার দল আওয়ামী লীগ এমনটা এখনো আশা করে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারপরও যদি কেউ নির্বাচনে না আসে, তাবে তাদের জন্য অপেক্ষা করা হবে না। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র ও নির্বাচন’ বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ইন্ডিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি গৌতম লাহিড়ী, এডিটরস গিল্ডের প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল বাবু, ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, টাইমস নাউয়ের কনসাল্টিং এডিটর সঞ্জয় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
গণতন্ত্রকে ‘দীর্ঘযাত্রা’ আখ্যা দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই যাত্রায় সহযাত্রীদের ভুমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সহযাত্রীদের মধ্যে যদি মনের মিল না থাকে তবে বেশিদূর যাওয়া যায় না! আলোচনায় অংশ নিয়ে এডিটরস গিল্ডের প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল বাবু বলেন, বাংলাদেশে প্রধান দল দু’টি। কিন্তু সমস্যা হয়ে যায় যখন একটি দল নির্বাচন বর্জন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি সত্য যে কিছু সংসদ সদস্য ভালো করছেন না। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক শ্যামল দত্ত বলেন, নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন করা, আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা এবং বিএনপির চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে টিকে থাকা। ভারতের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি গৌতম লাহিড়ী সেমিনারে বলেন, বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে কীভাবে এ দেশে নির্বাচন হবে। এ বিষয়ে বাইরের কারও কিছু বলার সুযোগ নেই।
নির্বাচনের আগে বিদেশিরা আর কথা বলবেন না- আশা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর: জাতীয় নির্বাচনের আগে বিদেশিরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আর কথা বলবে না আশা করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সেমিনারে বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এখনো অনেকে কথা বলার চেষ্টা করছেন। তবে আমি বিশ্বাস করি নির্বাচনের আগে এমন কিছু হবে না- এমন একটা পরিস্থিতি আমরা তৈরি করতে পেরেছি।

বিদেশিদের মুখ বন্ধ করতে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা খোলাসা না করেই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটা সময় আসবে, যখন সত্যিকার অর্থেই দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে ভাবছে, সেভাবে দেশ পরিচালিত হবে।
বিদেশি কূটনীতিকদের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা যা করে, সেটা নিয়ে অনেক কথাই হয়েছে। এখন নির্বাচনে মনোযোগ দিতে চাই। নির্বাচনকে আর কেউই বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। শাহরিয়ার আলম বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিভিন্ন রাষ্ট্রের কলোনি (উপনিবেশ) ছিল। এখানকার জিনের মধ্যেই বিদেশিদের হস্তক্ষেপ ঢুকে গেছে। তারপরও ভারত সবচেয়ে বড় ও সফল গণতান্ত্রিক দেশ এবং তাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়াও সফল।
কোনো দেশের নাম উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকারের কথা বলে, তারা ভারতের চেয়ে অনেক বেশি ধনী ও উন্নত হওয়া সত্ত্বেও তাদের নির্বাচনে অনেক সমস্যা থাকে। দক্ষিণ এশিয়া প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি দেশের নির্বাচন, গণতন্ত্র প্রভাব ফেলবে কীভাবে, তার ওপর দক্ষিণ এশিয়া গড়ে উঠছে। গণতন্ত্রের বিপক্ষে যারা, এই দেশগুলোর শত্রু যারা, তারা কিন্তু সক্রিয়। এখানে আমাদের পরস্পরিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।