তৃতীয় দফার শেষ দিনেও যশোরে স্বতঃস্ফূর্ত অবরোধ পালিত

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপির ডাকে যশোরে তৃতীয় দফার অবরোধও সর্বাত্মকভাবে পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার অবরোধের শেষ দিনে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণভাবে সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথ অবস্থান করেন।
দলের নেতা-কর্মীরা জানান, প্রতিদিনের মত এদিনও ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে জেলার সকল সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি রেলপথে নেমে আসেন নেতা-কর্মীরা। তারা অবরোধের সমর্থনে সর্বত্র মিছিল স্লোগানে প্রকম্পিত করেন । বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় ক্যাডাররা জেলা জুড়ে তাদের তান্ডব অব্যাহত রাখে। তবে কোনো কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি যশোরের গণতন্ত্রকামী জনতার সামনে।
এদিন নগর বিএনপি,যুবদল,ছাত্রদল যশোর-খুলনা রেলপথে অবস্থান করে অবরোধের সমর্থনে মিছিল স্লোগান দেয়। নগর বিএনপির ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড শাখার নেতৃবৃন্দ ভোর থেকে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে মিছিল করে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডসহ এলাকার বিভিন্ন সড়কে অবরোধের সমর্থনে মিছিল করে। বিকেলে জেলা ছাত্রদল শহরের এইচ এম এম রোডে মিছিল করে। এদিন যশোর-মহাসড়কে চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, এবং যশোর-বেনাপোল সড়কে সদর উপজেলা ছাত্রদল মিছিল করে। বেনাপৌল পৌর স্বেচ্ছাসেবক যশোর-বেনাপোল সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধের সমর্থনে মিছিল করে। আবার যশোর-নড়াইল সড়কেও মুক্তিকামী জনতা দীর্ঘ সময় অবস্থান নিয়ে মিছিল স্লোগান দেয়। বুধবার ,ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ও রাতে যশোর শহরের বিভিন্ন সড়কসহ ,যশোর-মনিরামপুর সড়কে মুক্তিকামী জনতা অবরোধের সমর্থনে মশাল মিছিল করে।
এদিকে বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার দিনভোর জেলাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রাখে। এসময় তারা যশোর নগর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জাবেদ হোসেন ও চৌগাছা স্বরুপদাহ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে।
অন্যদিকে সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধামকি দিয়েছে, শাসকদলের সন্ত্রাসী বাহিনী।
এছাড়া বৃহস্পতিবার দুপুরে শার্শা থানা পুলিশ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি, শার্শা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল হাসান জহির,ছাত্রদলের সদস্য সচিব সবুজ হোসেন খানসহ ৪৩জনকে আসামি করে কথিত নাশকতার অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
এদিন যশোরের কোনো রুটে যাত্রীবাহী পরিবহন ছেড়ে যায়নি। বেলা ১টার দিকে শংকরপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালের বিশাল জায়গা জুড়ে সারিবদ্ধভাবে বাস দাঁড়িয়ে আছে। পাশের ফাঁকা জায়গায় পরিবহন শ্রমিকরা কেউ কেউ ক্রিকেট খেলে অলস সময় পার করেন। আবার কোনো শ্রমিকা বাস ধোয়া মোছার কাজ করে এবং চায়ের দোকানে গল্প করে সময় পার করেন। যাত্রীবাহী বাসের মত পণ্যবাহী যানবাহনের চিত্রও একই ছিল । এদিন জেলার কোনো সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন,যশোরের মানুষ বরাবরই পরিবর্তনের পক্ষে । বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার দেশে যে প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে, এ থেকে পরিবর্তন ও পরিত্রাণের জন্য সমগ্র যশোরবাসী উন্মুখ হয়ে আছে। তারা বিএনপির কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করে যার যার অবস্থান থেকে আমাদের শান্তিপূণ কর্মসূচিতে আকুন্ঠ সমর্থন জ্ঞাপন করছেন। আন্দোলন সংগ্রামের তীর্থভূমি যশোর থেকে ফ্যাসিবাদকে হটিয়ে গণতান্তিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করবো ইনশা আল্লাহ।