মনিরামপুরের ৬ ইউনিয়নে ধানে খোলপচা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

0

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর)॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নে চলতি আমন চাষ মৌসুমে ধানে খোলপচা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এ রোগ ও পোকা দমনের বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করে সুফল মিলছে না। ফলে বাম্পার ফলনের আশা থাকলেও তা ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন চাষিরা।
সরেজমিনে বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটা ধানের জমিতে খোলপচা ও পাতা মোড়ানো পোকা ধান গাছের পাতার রস খেয়ে সাদা বর্ণ করে ফেলেছে এবং নিচের অংশে পচন ধরেছে।
খালিয়া গ্রামের আব্দুল মোতালেব, হাফিজুর রহমান, হানুয়ার গ্রামের টগর, কাদের, শফিকুল, মাহাবুর, ঝাঁপা গ্রামের বাবু, বাবুল আখতার, খলিলসহ অনেক কৃষক জানান, দোকান থেকে ওষুধ কিনে জমিতে ছিটিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
চালুয়াহাটি ইউনিয়নের সাবেক সদস্য আবুল হোসেন জানান, তিনি ৫২ শতকের ৫ বিঘায় ৫১ জাতের আমন ধানের চাষ করেছেন। ধান গাছের গঠনে জমি ভরপুর হয়ে গেছে। কিন্তু হঠাৎ ধান গাছের পাতামোড়ানো পোকায় খেয়ে সাদা বর্ণ করেছে।এছাড়া খোলপচা রোগও দেখা দিয়েছে। এতেকরে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন তিনি।
মশ্বিমনগর ইউনিয়নের ফারুক, মিজানুর, হরিহরনগরের ইলিয়াস, নছিম, খেদাপাড়া ইউনিয়নের গালদা গ্রামের আজিজুর, মোশারফ ছিদ্দিকসহ অনেক কৃষক জানিয়েছেন, তাদের ধানক্ষেতে পচা ও পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মনিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও পোকামাকড় দমন কর্মকর্তা তরিবুর রহমান জানান, এ মৌসুমে ধানে এ পোকা দেখা যায়। তবে জমিতে পারছু বা ডালপাতা পুতে রাখলে পাখি বসে ওই পোকাগুলো খেয়ে ফেলে। এছাড়া তিনি কৃষকদের কার্বারিল গ্রুপের ওষুধ জমিতে ছিটানোর জন্যে পরামর্শ দেন। এছাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভগিরথ বুধবার ঝাঁপা ইউনিয়নের বিভিন্ন ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করেন। তিনি কৃষকদের বিকেলে পোকা দমনের বিভিন্ন ওষুধের জমিতে ছিটিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমি। কিন্তু লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ২২ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে ঝাঁপা ইউনিয়নের ৩টি ব্লকে হাইব্রিডসহ ৪৯, ৫১, ২৩, ৯৮, ৭৫ বি আর ১০ ও স্বর্ণ বিভিন্ন জাতের ১৯ শ ৮৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এছাড়া রোহিতা ইউনিয়নে ১৫ শ ৭৩ হেক্টর, মশ্বিমনগর ইউনিয়নে ১২শ ৬৬ হেক্টর, চালুয়াহাটি ইউনিয়নে ১৪ শ ৫১ হেক্টর, হরিহরনগর ইউনিয়নে ১৭শ ৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।