শেষ সময়ে চৌগাছার কামারশালায় ভিড়

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ পবিত্র ঈদুল আযহা সন্নিকটে, সামর্থবান ব্যক্তিরা কোরবানির পশু ক্রয়সহ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। ঈদকে সামনে রেখে একেবারেই শেষ সময়ে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন চৌগাছার কামারপাড়ার বাসিন্দারা। দিনরাত অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরি চাপাতি প্রভৃতি। তবে কুরবানি পশু ছেলা- কাটার কাজে নিয়োজিত কসাই সংকট দেখা দিয়েছে চৌগাছাতে। অধিক লাভের আসায় তারা ছুটছেন রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে।
আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) অনষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা এলেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারপাড়ায়। তারা দা বটি, ছুরি চাপাতি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন। অন্যান্য বছরের মত এ বছরও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি। প্রতিটি কামারশালাতে চলছে কোরবানিতে ব্যবহৃত চাপাতি, ছুরি, বটি তৈরির কাজ। শেষ সময়ে এসে তাদের যেন দম ফেলার সময় টুকু নেই।
গতকাল নিরিবিলিপাড়ায় অবস্থিত কামারশালায় গিয়ে দেখা যায়, এক একটি প্রতিষ্ঠানে অন্তত ৫ থেকে ৮ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন। কথা হয় পাতিবিলা গ্রামের দিনবন্ধু কর্মকারের ছেলে প্রদিপ কুমার কর্মকার, একই গ্রামের পূর্ণ কর্মকারের ছেলে পরিতোষ কর্মকারের সাথে। তারা জানান, কোরবানি এলে আমাদের কাজ একটু বেড়ে যায়। এ বছর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি দরেই সব কিছু বিক্রি করতে হচ্ছে। চাপাতির কেজি হচ্ছে ৫০০ টাকা, ছুরি প্রকার ভেদে ১০০ হতে ৩০০ টাকা, পশু জবাই করা ছুরি বিক্রি করতে হচ্ছে ৪০০ টাকায়। লোহা, ইস্পাত, কয়লা, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা জানান। চৌগাছা উপজেলা সদরসহ উপজেলার মাধবপুর, পাতিবিলা, সলুয়া, খড়িঞ্চা, গরীবপুর, পলুয়া, পুড়াপাড়াসহ সকল কামারপাড়ার কর্মকাররা বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কোরবানি ঈদে এ বছর কসাই পাওয়া দুরুহ ব্যাপার হয়ে উঠেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা সদরে বসবাসরত ব্যক্তিরা গরু কিংবা ছাগল কোরবানি করে তা প্রস্তুত করেন কসাই দিয়ে। আর গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা নিজেদের মত করেই কোরবানি করা পশু প্রস্তুত করে থাকেন। তবে এ বছর বাজার কেন্দ্রিক কোরবানি করা ব্যক্তিরা কসাই সংকটে পড়েছেন। চৌগাছার পেশাদার কসাইয়ের একটি অংশ অধিক মুনাফার জন্যে রাজধানী ঢাকার বনানী, গুলশান, বারিধারা অভিজাত এলাকায় বেশ আগে ভাগেই চুক্তি করে রেখেছেন।
কসাই সংকটের সুযোগে মৌসুমী কসাইদের কদর বেড়েছে। তারা একটি গরু ৫ হাজার টাকা হতে শুরু করে ৮ হাজার টাকায় কুটে দেবেন বলে জানান একাধিক মৌসুমী কসাই।