খুলনায় বিএনপি নেতা হেলাল ও আমীর এজাজসহ ১৩ নেতা-কর্মী কারাগারে

0

খুলনা ব্যুরো॥ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও খুলনা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খানসহ ডুমুরিয়া এবং দিঘলিয়া থানার দুই মামলায় ১৩জন নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।  বৃহস্পতিবার ( ২৭ এপ্রিল) খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম এ আদেশ দেন। উচ্চ আদালতের জামিন শেষে নিম্নআদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে তা নামঞ্জুর হয়। নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠানোয় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কারা অন্তরীণ নেতা-কর্মীরা হচ্ছেন ডুমুরিয়া থানার মামলায় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, শেখ ফরহাদ হোসেন, আবরার হোসাইন সৈকত, আব্দুর রব আকুঞ্জি, জামিনুর রহমান, মোল্লা মশিউর রহমান ও শাহ নেওয়াজ শেখ। অন্যদিকে দিঘলিয়া থানায় অনুরূপ অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় হিমেল গাজী, নবাব মোল্লা, সোহেল রানা, মিঠু খান ও সৈয়দ সাগর।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ-গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, সার-বীজ ও কৃষি উপকরণের মূল্য কমানো এবং বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ ১০দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পদযাত্রা ডুমুরিয়াতেও পালন করে বিএনপি। ওই রাতে রাতে ডুমুরিয়া থানার এস আই তারেক রাইয়ান বাদী হয়ে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মোল্লা মোশাররফ হোসেন মফিজসহ ১৮জনের নাম উল্লেখসহ ১৩০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতা সৃষ্টির ‘কাল্পনিক’ অভিযোগে মামলা করেন। এ মামলায় উচ্চআদালত থেকে জামিনে ছিলেন এজাহারনামীয় নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার আদালত ৮ জনের জামিনমঞ্জুর করেন। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মোল্যা মোশাররফ হোসেন মফিজ, আব্দুল হালিম, মশিউর রহমান লিটন, হাফিজুর রহমান শেখ, শেখ সরোয়ার হোসেন, শফি খান, আতিয়ার সরদার ও সরদার আব্দুল মালেক।
আদালতে নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পীসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। নেতৃবৃন্দকে আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে নেয়ার পথে সরকার বিরোধী গণন বিদারী স্লোগানে প্রকম্পিত হয় সমগ্র এলাকা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিন্দা : ‘অসত্য ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায়’ বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল এবং খুলনা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমির এজাজ খানসহ ১৩ জন নেতৃবৃন্দের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণকে সাথে নিয়ে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী বিএনপি’র নেতৃত্ব ধ্বংস করতেই অবৈধ মিডনাইট সরকার মিথ্যা মামলায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল এবং খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খানসহ ১৩ নেতার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ বর্তমান ভয়াবহ দুঃশাসনের আরেকটি নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার এখন বর্তমান সরকারের দলন-পীড়নে ক্ষতবিক্ষত। আইনের শাসন না থাকায় ঘরে-বাইরে কারো জীবনের নিরাপত্তা নেই। বর্তমানে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হয়েও নির্দোষ লোককে অপরাধী সাজিয়ে মামলা, গ্রেফতার, কারান্তরীণ ও হয়রানি করা হচ্ছে। বিরোধী দলের আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে এবং বিরোধী নেতা-কর্মীসহ সাধারণ নাগরিকের মনে ভীতি সঞ্চার করতেই ফ্যাসিবাদী কায়দায় ধারাবাহিকভাবে সরকারি জুলুম-নির্যাতন চলমান রাখা হয়েছে। তবে নিশিরাতের আওয়ামী সরকার এসব নির্মম কর্মকান্ড সংঘটিত করে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না, কারণ জনগণ এখন কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকারের নিষ্ঠুর আচরণের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।
বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে উল্লিখিত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।
জিয়া পরিষদের নিন্দা : বিএনপি’র তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল এবং খুলনা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খানসহ ৮ নেতা-কর্মীকে কারাগারে প্রেরণের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার পূর্বক নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বিবৃতি প্রদান করেছেন খুলনার জিয়া পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিদাতারা হলেন, জিয়া পরিষদের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. মো. হারুনুর রশিদ খান, প্রফেসর ড. মো. আশরাফ হোসেন, প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মো. গোলাম রাক্কিবু, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, খুলনা জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল, খুলনা মহানগর জিয়া পরিষদের সভাপতি অ্যাড. মশিউর রহমান নান্নু, জেলা জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুর রহমান শফিক, মহানগর জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মুনসি শফিকুল আলম, জেলা শাখার সহসভাপতি সাংবাদিক মো. রুহুল আমীন প্রমুখ।