চৌগাছায় একসাথে একাধিক ফসলের চাষে সাফল্য

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছার কৃষক এক জমিতে একটি ফসলের সাথে একাধিক ফসল উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা আগে বিচ্ছিন্নভাবে সাথি ফসলের চাষ করলেও এখন তা বেশ বিস্তার লাভ করেছে। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে সাথি ফসলের চাষ নিঃসন্দেহে লাভজনক।
চৌগাছা অঞ্চলের মাটি ধান পাটের পাশাপাশি সব ধরনের খাদ্যশষ্য ও সবজি চাষের জন্য বরাবরই উপযোগী। এক সময় চাষিরা বছরে মাত্র দুটি ফসল উৎপাদন করে বছর শেষ করেছেন। বর্তমানে সেই একই জমিতে তিনটি, কোথাও কোথাও চারটি ফসল উৎপাদন হচ্ছে।
উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, বোরো চাষযোগ্য জমিতে কৃষক যথারীতি বোরো ধানের চাষ করেছেন। আর অপেক্ষাকৃত কিছুটা উঁচু জমিতে চাষ করা হয়েছে মরিচ, বেগুন, লালশাক, পটল, পেঁয়াজ, রসুনসহ হরেক রকমের ফসল। তবে এক জমিতে একাধিক ফসলের চাষও দেখা গেছে অনেক জমিতে। পৌর এলাকার তারিনিবাস গ্রামের কৃষক আজগার আলী এক বিঘা জমিতে পটলের চাষ করেছেন। সমুদয় জমি বেড তৈরি করার পাশাপাশি পটলের লতা মাচায় উঠাতে বাঁশ, সুতা আর পাটখড়ির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। বর্তমানে প্রতিটি মাচায় পটলের লতা আপন মনে শাখা প্রশাখা বিস্তার করে চলেছে। একই জমিতে তিনি পটলের মাচার নিচে প্রতিটি বেডে উন্নত জাতের রসুনের চাষ করেছেন। এ বছরের আবহাওয়া রসুন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাই পটলের ক্ষেতে রসুনের চাষ হলেও আশানুরুপ ফলন হবে বলে কৃষক মনে করছেন। আর কয়েক দিন পরেই রসুন ঘরে আসবে, বাজার দরও ভালো তাই বোরো চাষের ব্যয় বহনে সাথি ফসল রসুন তার ব্যাপক উপকারে আসবে। শুধু রসুন না পটল রসুনের সাথে জমির চারপাশে লাগানো হয়েছে বেগুন। প্রতিটি বেগুন গাছে ফুল আর জালি বেগুনে ভরে উঠেছে।
কৃষক আজগার আলী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কৃষককে অনেক হিসেব নিকেশ করে মাঠে ফসল উৎপাদন করতে হচ্ছে, কেননা কৃষি পণ্যের দাম নাগালের বাইরে। জমিতে একটি ফসল ফলানোর পর তার নায্য বাজার দর না পেলে যে ক্ষতি হয়, সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা খুবই কষ্টকর। তাই নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে একটি ফসলের সাথে হরেক রকমের ফসল ফলানোর চেষ্টা করছি। পটলের সাথে সাথে গোটা জমিতে চাষ করা হয়েছে রসুন। বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজার দরও ভালো পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। মাঠে কর্মরত কৃষক চঞ্চল কবির, আলতাফ হোসেন, বেনিয়ার রহমান, ফজলুর রহমান বলেন, এখন একেটি পরিবার ভেঙ্গে একাধিক পরিবার হয়েছে, জমিও হয়েছে খন্ডখন্ড।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, উপজেলার বেশ কিছু এলাকাতে আগে বিচ্ছিন্নভাবে সাথি ফসলের চাষ হলেও এখন তা বেশ বিস্তার লাভ করেছে। এক জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন নিঃসন্দেহে লাভজনক।