তিন কারাগারের অনিয়ম তদন্ত হোক

0

 

সরকারি কাজকর্মে দুর্নীতি এখন সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু দুর্নীতির কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশে জিডিপির ২ থেকে ৩ শতাংশ লোপাট হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে, ঘুষ ছাড়া সরকারি অফিসগুলোতে এখন কোনো কাজই হয় না। এর পরও সরকারি অফিসগুলোর সেবা পেতে মানুষকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সম্প্রতি ঢাকার একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের ১৩ কারাগারে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ৪০ হাজার ৮১৬ টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে লোক নিয়োগ, কেনাকাটা, ক্যান্টিনের আয়সহ অনেক কিছুই নিয়ম মেনে করা হয়নি।
নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী কারাগারগুলোতে ছয় ক্যাটাগরিতে অনিয়ম হয়েছে এবং তাতে ৪৪টি খাতে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ৪০ হাজার ৮১৬ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। জানা যায়, কারাগারের ভেতরে সব ধরনের কাজ কয়েদিদের দিয়ে করানোর নিয়ম রয়েছে। এর বিপরীতে কয়েদিদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। জানা যায়, এই নিয়মের ব্যত্যয় করে যশোর, কেরানীগঞ্জ ও ময়মনসিংহ ও যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে বাইরের ৫০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষের হিসাবেই উল্লেখ আছে। জরুরি বিবেচনায় এই তিন কারাগারে সর্বোচ্চ ১৩ জনকে নিয়োগ দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। এই তিন কারাগারের অতিরিক্ত নিয়োগের ফলে সরকারকে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে এক কোটি ৫২ হাজার ১৫০ টাকা। খবর অনুযায়ী সরকারি টাকায় কারাগারের ভেতরে ক্যান্টিন তৈরি করা হয়েছে। এতে সরকারি স্থাপনা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, জনবল ব্যবহার করে ক্যান্টিন পরিচালনা করা হয়। কিন্তু ক্যান্টিনের কোনো আয় সরকারের কোষাগারে যায় না। এমনকি কয়েদিদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যায় তা-ও সরকারি কোষাগারে জমা হয় না। উপরন্তু ক্যান্টিনে ব্যবহৃত গ্যাসের বিল নিয়মিত পরিশোধ না করায় সরকারের ৬৮ লাখ ৫৬ হাজার ৭৯২ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কারাগারের বিভিন্ন সম্পত্তি ইজারা দিয়ে পাওয়া ৮৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৬৯ টাকা পাওয়া গেলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।
এর আগেও কারাগারের অনেক দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে এসেছে। উচ্চ পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ অনেক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। এর পরও দুর্নীতি কমছে না কেন? আমরা চাই, এই তিনটিসহ সকল কারাগারে হওয়া দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।