জট বাড়ছে উচ্চ শিক্ষায়

0

প্রাণঘাতী করোনায় বিঘিœত হচ্ছে উচ্চশিক্ষা। সাড়ে ৫ মাসে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েছে সার্বিকভাবে। সত্বর কার্যকর উদ্যোগ না নিলে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে শিক্ষার। জটের পর জট জড়িয়ে যাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্সার্থীদের জীবন। সরকার ও ইউজিসিকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে দ্রুত।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীা শুরু হয় সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে। এ সময়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিার্থীদের পদচারণে মুখর থাকে ক্যাম্পাসগুলো। এবার ব্যত্যয় ঘটতে যাচ্ছে। করোনার প্রাদুর্ভাবে এখনো উচ্চ মাধ্যমিক পরীা হয়নি। এ ছাড়া অনলাইনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মোটামুটি সক্রিয় হলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তত সক্রিয় হয়নি। বিভিন্ন সমস্যার কারণে সব শিার্থী অনলাইনে যুক্ত হতে পারছে না। সেশনজট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মোটকথা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে উচ্চশিা।
সাড়ে পাঁচ মাস ধরে ‘বন্ধ’ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। অনলাইনে কাস চলছে সরকারি-বেসরকারি বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে কতজন শিার্থী অনলাইনে অংশ নিচ্ছে, কতটুকু তারা শিখছে, এ ব্যাপারে কোনো সমীা নেই। স্কুলগুলোতে পিইসি পরীা ও জেএসসি পরীা বাতিল করা হয়েছে এরই মধ্যে। তাদের পাঠক্রমও সংপ্তি করা হচ্ছে। কিন্তু উচ্চশিায় পরীা বাতিলের সুযোগ নেই। পাঠক্রম সংপ্তি করারও উপায় নেই। এটা বড় রকমের সমস্যা। দিন যত যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা তত প্রকট হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুললে যদি একজনের করোনা হয়, তাহলে আরো ১০ জন তাতে আক্রান্ত হতে পারে। তাই তাঁরা আরো পর্যবেণ করতে চান। সরকারের নির্দেশনার অপোয়ও করছেন তাঁরা। তাঁরা অনলাইন কাস কিভাবে জোরদার করা যায় সে চেষ্টা করছেন। কিন্তু সময় তো যথেষ্ট পার হয়ে গেছে। যেসব শিার্থীর ডিভাইস নেই তাদের ব্যাপারে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তারা যাতে স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট পেতে পারে সে জন্য শিা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু সব কাজেই ধীরগতি।
দেশে উচ্চশিার্থী ৪১ লাখের মতো। ৪৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে প্রায় তিন লাখ শিার্থী। ১০৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে প্রায় চার লাখ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই হাজার ২৫৮টি কলেজে রয়েছে ২৮ লাখ। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিার্থী পাঁচ লাখ। আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য উচ্চশিা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে আরো প্রায় এক লাখ শিার্থী। এই বিপুলসংখ্যক শিার্থীর শিাজীবন বিপর্যস্ত প্রায়। তাদের নিয়ে কার্যকর পন্থায় ভাবতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার্থীদের বেশির ভাগ পড়ালেখার বাইরে। সরকারি কলেজ ও জেলা শহরের বড় বেসরকারি কলেজে কিছু অনলাইন কাস হলেও মফস্বলের কলেজগুলোতে কাস হয় না। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা বা ইন্টারনেটের ধীরগতি, ডিজিটাল ডিভাইসের অভাব প্রভৃতি কারণে অনলাইন কাস করা খুবই কঠিন। শিকরাও তথ্য-প্রযুক্তিতে বেশ দুর্বল। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু না কিছু সমস্যা রয়েছে। এসব বিষয় গভীরভাবে বিবেচনায় নিয়ে করণীয় ঠিক করতে হবে সত্বর। না হলে দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কা রয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আশা করছে সরকার ও ইউজিসি দ্রুত একিটি গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নেবেন।