কৃষকদের পাশে এখনই দাঁড়াতে হবে

0

 

দুই দফা বন্যায় বৃহত্তর সিলেট, হাওরাঞ্চল কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে আউশ ধানেরও। এদিকে আমন ধানের চারা রোপণের সময় চলে যেতে থাকলেও অনেক এলাকায় বীজতলা পানির অভাবে সম্ভব হয়নি। এরই মাঝে সার ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি মারাত্মক ক্ষতিকর হয়েছে। বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে রোপা আমন চাষাবাদে কৃষকদের সক্ষমতা ও আগ্রহ দুটিই কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার সুনামগঞ্জ জেলার সাড়ে ১৬ হাজার কৃষককে বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে বীজধান ও সার সরবরাহ করছে। অনুরূপ প্রণোদনা দেশের আরো অনেক অঞ্চলে প্রদান করা জরুরি। সেক্ষেত্রে প্রকৃত ক্ষতির শিকারের সংখ্যা নিরূপণও করছে উপযুক্ত হওয়া জরুরি কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে কৃষি ও কৃষকদের রক্ষা করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। জানা যায়, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আমরা জানি, আবহাওয়াগত কারণে মধ্য ভাদ্র পর্যন্ত আমনের চারা রোপণ করা যাবে। সে হিসেবে বীজতলা তৈরির এখনই চূড়ান্ত সময়। কিন্তু নানা কারণে অনেক কৃষক বীজতলা তৈরিতে পিছিয়ে যাচ্ছেন। এই নানা কারণের প্রধান কারণ হচ্ছে অর্থাভাবে। তাই কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে সার ও বীজধান সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া বিশেষ প্রয়োজন। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষকপ্রতি পাঁচ কেজি করে আট হাজার ১০০ কৃষককে বিআর ২২ ধান এবং আট হাজার ৪০০ জনকে পাঁচ কেজি করে বিআর ২৩ ধান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১৬ হাজার ৫০০ কৃষকের প্রত্যেককে ১০ কেজি জিওপি এবং ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এর আগেও সরকারিভাবে বিআর ৪৯, ৭৫, ৮৭, ২২, ২৩ এবং বিনা ১৬, ১৭ ও ২৩ ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল বলে খবরে বলা হয়। এবার উচ্চ ফলনশীল বিআর ২২ ও ২৩ বীজধানের চাষাবাদে প্রচারণা চালিয়েছে কৃষি বিভাগ। প্রচারণার কারণে এই বীজের চাহিদা বেশি কৃষকরা যথাসময়ে পর্যাপ্ত বীজধান পাননি বলে অভিযোগও রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্যসব জেলাতে রয়েছে বীজসহ সব উপকরণের অভাব। সুনামগঞ্জের কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছে সেই ক্ষতি যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে। কিন্তু অন্য জেলায় এখনও কোনো খবর হয়নি।
একথা সরকারও জানে, বন্যায় বৃহত্তর অন্যান্য জেলায়ও বোরো ও আউশ ধানের বড় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও পাবনা অঞ্চলেও। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাটসহ আরো কিছু এলাকায় চাষাবাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। তিস্তা অববাহিকা তৃতীয় দফা বন্যার শিকার হয়েছে। এসব এলাকার দুর্গত কৃষকদেরও পাশে এখনো দাঁড়ানো হয়নি। ইতোমধ্যে ক্ষতির মাত্রা ছাড়িয়েছে সারাদেশে। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত হবে সারাদেশের প্রণোদনার ব্যবস্থা করা। অন্যথায় আসন সংকট মারাত্মক হবে।