এ বর্বরতা থামাতে হবে

0

মানুষের মূল লক্ষ্য থাকে মানুষ হবার। অর্থাৎ নিজেকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। সমাজকে পঙ্কিলতার কবল থেকে উদ্ধার করে আলোর পথে এনে আলোকিত সমাজ গড়া। মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় চরমে পৌঁছেছে। সমাজ ক্রমেই বর্বরতার চরমে চলে যাওয়ায় আমাদের সমাজের পরিচয়টাই যেন পাল্টে যাচ্ছে। সে কারণে সব ধরনের অপরাধ বাড়ছে। নারী নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে স্বাভাবিকভাবেই। প্রশ্ন উঠছে, এই সমাজ কোথায় যাচ্ছে ? কোন ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা ? যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সমাজও আলোকিত হবে। মানুষের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে এটাই তো কাক্সিক্ষত। দেশে শিক্ষিতের হার বেড়েছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নও এগোচ্ছে। কিন্তু কাক্সিক্ষত মানবিক উন্নয়ন হচ্ছে কি-না সে প্রশ্ন বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে সবার সামনে। যারা ঘরে ঢুকে ধর্ষণের আধুনিক সংস্করণ চলন্ত বাস, ট্রেন, ট্রাকে ধর্ষণও পুরানো হয়ে গেছে। এখন এসব অপরাধ বাড়লেও হৈ-চৈ প্রতিবাদ বাড়ছে না। স্কুল, মাদ্রাসায় শিক্ষকের হাতে ছাত্রী নিরাপত্তা খুঁজে পাচ্ছি না। শিক্ষকের অনৈতিকতায় বখে যাওয়া ছাত্রের হাতে শিক্ষকও নিরাপত্তা পাচ্ছে না। লাঞ্ছিত অপমানিত পর্ব পেরিয়ে এখন প্রাণ হারানোর ঘটনা ঘটছে। যার সর্বশেষ শিকার শিক্ষক উত্তম কুমার। আশুলিয়ার ওই নৃশংস হত্যাকান্ডের পর ঘাতক ছাত্র জিত দাবি করেছে সে স্কুলে হিরো হতে স্যারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। কী জঘন্য শিক্ষা সে পেয়েছে।
এদিকে, একদিন পর রাবিতে ল’বিভাগের এক ছাত্র ক্লাসে দরজা আটকে শিক্ষককে অপমান করেছে।
বাংলাদেশ এ ধরনের ঘটনা তো এটাই প্রথম নয়। এর আগেও এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটেছে। গণমাধ্যমে অনেক ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক আলোড়নও সৃষ্টি হয়। তারপর তা চলে যায় আড়ালে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। শুধু আইন পাস হলেই যে এই সামাজিক ব্যাধি থেকে মুক্তি মিলবে না, এখন তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। উপযুক্ত শাস্তি না হওয়ায় অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। নারী ও শিক্ষকের প্রতি সংহিতাসহ সব ধরনের অপরাধ কমাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে বলে আমরা মনে করি। আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি দৃশ্যমান করা গেলে এ ধরনের অপরাধ কমবে। আমরা আশা করবো, সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি গুরুত্ব দেবেন।