বৈশাখে পৌষের কুয়াশা চৌগাছায়!

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ শুক্রবার ভোর রাত হতে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে যশোরের চৌগাছা। ভোরে সূর্যের আলো দেখা সম্ভব হয়নি মানুষের, সকাল ৮ টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা ছিল গোটা উপজেলা। সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হয়েছে সব ধরনের বাহনকে। স্বাভাবিক কাজে ঘটেছে বিঘ্ন। গতকাল ছিল যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল ২০ বৈশাখ শুক্রবার ভোর রাত থেকে কুয়াশা দেখা দেয় চৌগাছাতে। সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে এর তীব্রতা। ভোর ৫টা হতে ৮টা পর্যন্ত গোটা চৌগাছা এলাকা ঢেকে যায় কুয়াশার চাদরে। অনেকেই মনে করছেন এ যেন পৌষের কোন এক সকাল। কুয়াশার পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে সড়কে ১০ হাত দূরে কিছুই দেখা যায়নি। যানবাহনের চালককে সতর্কতার সাথে বাহনের হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হয়েছে। আর কৃষক কুয়াশার কারণে সময়মত কাজে বের হতে পারেনি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার ভোরে অধিকাংশ এলাকাতে দেখা গেছে ঘন কুয়াশা। সকাল ৮টার পর কুয়াশা কেটে যায় এবং পূর্বের ন্যায় ছড়িয়ে পড়ে তাপপ্রবাহ। এদিন সকালে উপজেলার, পাতিবিলা, ইছাপুর, সাদিপুর মুক্তদাহ, তেঘরী, জগদীশপুরসহ বেশ কিছু গ্রামাঞ্চল ঘুরে দেখা যায় কুয়াশার দাপট।
জগদীশপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন, গরমের এই তীব্রতার মধ্যে এমন কুয়াশা কখনও দেখিনি। মাঠে যাওয়া বন্ধ করে বাড়িতেই আছি। একই গ্রামের মজনুর রহমান, মো. বাবু, ইসহক আলী বলেন, কুয়াশার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, কিছুই দেখা যাইনি। এই সময়ে বাইরে বিশেষ করে মাঠের কাজ বন্ধ রেখেছি।
তেহরী গ্রামের আব্দুল মালেক, আলতাফ হোসেন, আব্দুল আজিজ বলেন, গরমের সময় এমন ঘন কুয়াশা কখনও দেখেনি। ভোর রাতে রীতিমত ভয় পেয়ে গেছি, ফজরের আজানের পর সব দিক পরিষ্কার হয়ে যায় অথচ শুক্রবার একই সময়ে আরও অন্ধকার হয়ে আসতে শুরু করে। পরে বুঝতে পারি কুয়াশার কারণেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাস, ইজিবাইক, মোটরচালিত ভ্যানচালকরা বলেন, সকাল বেলাতে হঠাৎ কুয়াশায় ঢেকে যায় রাস্তাঘাট। সড়কে এসে কুয়াশার কারণে কিছু সময় থেমে তারপর চলতে শুরু করি।
এ বিষয়ে খুলনা আবহাওয়া দফতরের সহকারী আবহাওয়াবীদ আমিরুল আজাদ বলেন, এটা হতে পারে। এখন আকাশে মেঘের ঘনঘটা। মেঘ কয়েক স্তরে ভাগ হয়ে অবস্থান করছে। যে অঞ্চলে ‘ লো ক্লাউড’ সেখানে ‘সারফেজ’ গরম হওয়ার কারণে মেঘ কুয়াশা আকারে নেমে আসে। যেখানে ঘন মেঘ সেখানে নেমে আসে বৃষ্টি আকারে। যেমন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট এলাকায় হচ্ছে।
চৌগাছা ৫০ শয্যা সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আল ইমরান বলেন, অসময়ে ঘন কুয়াশা স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর। ঠান্ডা কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন মানুষ। কুয়াশায় মাস্ক পরাসহ বাড়তি সতর্কতার সাথে চলাফেরার পরামর্শ দেন তিনি।