চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের অভিনন্দন

0

দেশব্যাপী বন্যা মানে দেশব্যাপী দুর্বিপাক। এ ধরণের জাতীয় দুর্যোগ জাতীয়তভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাহায্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে এগিয়ে আসতে হবে। এই চেতনা থেকে এবার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের, বিশেষত চলচ্চিত্র শিল্পীদের অনেকে বন্যার্তদের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন। এদের মধ্যে মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও অনন্ত জলিলের কথা উল্লেখ করা যায়। তারা র্দুগত এলাকায় ব্যাপক ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেতও ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছেন। তিনি অন্যদেরও ত্রাণ সহায়তা দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। অনন্ত জলিল আসন্ন ঈদে কোরবানির সংখ্যা কমিয়ে সেই অর্থ এবং এই সঙ্গে অন্যান্য অর্থ যোগ করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। প্রসঙ্গত তিনি বলেছেন, আমাদের যাদের অর্থকড়ি আছে, তারা কেউ তা কবরে নিয়ে যেতে পারবো না। কাজেই, সেই অর্থ মানুষের কাজে খরচ করতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। তবে এ চিন্তা ও বক্তব্য অত্যন্ত সঠিক ও অনুপ্রেরণাদায়ক। যারা সামর্থ্যবান, বিত্তশালী, ধনী তারা যদি সবাই এভাবে চিন্তা করেন এবং বন্যা দুর্গতদের কল্যাণে হাত বাড়িয়ে দেন তবে জাতীয় এই দুর্যোগ মোকাবিলা সহজ হবে। মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘব হবে। কোটিপতির সংখ্যা আমাদের দেশে কম নয়। প্রতিবছর তাদের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ, জনকল্যাণ ও মানুষের দুঃখ-দুর্ভোগ মোচনে তাদের এগিয়ে আসতে কমই দেখা যায়। তাদের এই মনোবৃত্তির পরিবর্তন হওয়া আবশ্যক বলে আমরা মনে করি। এ কথা সত্য যে, ত্রাণকর্মে প্রশাসনের ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য। অথচ, প্রতিটি দুর্যোগে, প্রতিটি ত্রাণকর্ম পরিচালনায় নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি অসঙ্গতি ও অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ত্রাণে কোনো সুষমতা থাকে না। কেউ বেশি পায়, কেউ কম পায়, কেউ পায়ই না। সরকারি দলের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তো অতি পুরোনো। ত্রাণের টাকা, চাল, গম কীভাবে সরকারি দলের লোকেরা লোপাট বা আত্মসাৎ করে, সেটা আমাদের কারো অজানা নেই। করোনাকালে সরকারের দেয়া সহায়তা লুট করার রীতিমতো উৎসব হয়ে গেছে। ২০ লাখ টাকা বিতরণের জন্য ১০ লাখ টাকা খরচের অভিযোগও পাওয়া গেছে। এবার যেন ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতি, অপারগতা ও ব্যর্থতা না ঘটে, সরকারি দলের লোকেরা যেন তা না খেয়ে ফেলে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সব ত্রাণ প্রচেষ্টাকে সমন্বিত করে জাতীয় পর্যায়ে ও কতৃত্বে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে দুর্নীতি-দুস্কৃতি যেমন কম হতে পারে, তেমনি দুর্গত মানুষের অধিকতর কল্যাণ হতে পারে। বিষয়টি সদয় সক্রিয় বিবেচনার দাবি রাখে। আমরা আবারো চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের অভিনন্দন জানাই।