যশোরের পরিস্থিতির উন্নতিই কাম্য

0

যশোরের করোনা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে ভয়ংকর হয়ে উঠছে, এ জাতীয় খবর এখন যশোরের পত্রিকাগুলোতে বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতি ও বিরাজমান আতঙ্কের নানারকম তথ্যউপাত্য দিয়ে সংবাদগুলো করছেন সাংবাদিকরা। বেশিরভাগ তথ্যই সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্তদের দেয়া। অর্থাৎ তথ্যের ভিত্তি নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই। ফলে এটা মানতেই হচ্ছে যশোরের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বা হয়েছে। এখন করোনা থেকে বাঁচার জন্য জানা প্রয়োজন কতটা অবনতি হয়েছে, কোথায় কীভাবে হয়েছে বা হচ্ছে এবং এ থেকে রা পাওয়ার উপায় কী? এেেত্র আমরা যশোরের পত্রিকাগুলোতে চোখ রাখতে পারি।
গতকাল বুধবার যশোরের শীর্ষ দৈনিক “লোকসমাজে” দেখা যায় করোনার বিভিন্ন দিক নিয়ে একাধিক সংবাদ ও ছবি প্রকাশ হয়েছে । যাতে প্রকৃত চিত্রের অনেকটা স্পষ্ট হয়েছে। আমরা এখানে কয়েকটি শিরোনাম দিয়েই ভয়াবহতার আলামত স্পষ্ট করতে চাই। পত্রিকার একটি সংবাদের শিরোনাম ছিল “লকডাউন কার্যকরে কঠোর হচ্ছে যশোর জেলা প্রশাসন”। শিরোনামই বলে দেয় বর্তমান অবস্থা হচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহর ও শহরতলীর পাড়ায় পাড়ায় আক্রান্তদের বাড়ি এলাকায় যে লকডাউন চলছে তার “লক”টা আসলে নড়বড়ে হয়ে গেছে। মানুষ মানছে না বা প্রশাসনিক তদারকি নেই। ফলে প্রশাসনকে কঠোর হতে হচ্ছে। অপর একটি শিরোনাম ছিল “যশোর শহরে ইজিবাইকে মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব”। সংবাদের সাথে যে ইজিবাইকের ছবি দেয়া হয়েছে তাতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে তিনজনের স্থলে ৫/৬ জন যাত্রী যাচ্ছে। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, ইজি চালকরা বিপজ্জনক সংখ্যার এই যাত্রী বহন করছে কর্তব্যরত পুলিশের সামনেই। পুলিশের সাথে বিশেষ সম্পর্কের কারণে চালকরা বেপরোয়া আচরণ করছে যাত্রীদের সাথে। আরেকটি শিরোনাম “যশোরে ব্যাংকার পুলিশ আনসার ছাত্রী ও গৃহিণীর শরীরে করোনা”। সংবাদের গর্ভে আক্রান্তের আরো শ্রেণি ও সংখ্যা রয়েছে। পত্রিকায় অত্যন্ত উদ্বেগ ও দুঃখজনক একটি বিষয়ের ছবি প্রকাশ হয়েছে। ছবিটি যশোর কালেক্টরেট ভবনের, যেখানে জেলা প্রশাসকের দপ্তরসহ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর রয়েছে। এখানে প্রবেশের প্রধান সিড়ির পাশে করোনার শুরুতে বসানো হাতধোয়ার ব্যবস্থাটি বন্ধ রয়েছে। করোনা থেকে রার প্রধান উপায় যেখানে হাতধোয়া আর মাস্ক পরা সেখানে হাতধোয়ার ব্যবস্থা বন্ধ। এই অবস্থা কিন্তু শুধু ওই ভবনে নয়, শহরের প্রায় সব ভবনেই বিরাজ করছে। হাতধোয়ার কার্যকর পদ্ধতিটি এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে দিন দিন শহর অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে। একই সাথে অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে শহর থেকে গ্রাম। বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা এক বিশাল ভাবনার বিষয়। আমরা মনে করি এই ভাবনাটা তখন না ভেবে এখোনি ভাবা প্রয়োজন।
আমরা লকডাউন কার্যকরে জেলা প্রশাসনের কঠোর হওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কারণ, প্রশাসনের প্রচেষ্টা ছাড়া কারোপইে করোনার ভয়াবহতা থেকে মানুষকে রা করা সম্ভব নয়। মানুষ সাধারণের নিষেধ মানতে অভ্যস্ত নয়। আমরা আশা করব জেলা প্রশাসকের বিশেষ নির্দেশনায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র করোনা নিয়ন্ত্রণের সকল পর্যায়ে কঠোর অবস্থান নেবেন। আমরা সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানুষের নিরাপত্তার কথায় ভাবছি, বলছি।