দর্শনা-খুলনা দ্বৈত রেলপথের ডোনার খুঁজতে ৮ বছর পার!

0

সাইফুর রহমান সাইফ ॥ নিজেদের টাকায় করা যাচ্ছে না। তাই খোঁজা হচ্ছে ডোনার বা দাতা। আর তা করতে পার হয়েছে প্রায় আট বছর। এমনটি হয়েছে দর্শনা-খুলনা দ্বৈত রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে। এ তথ্যে সম্মতি দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার।
দৈনিক লোকসমাজকে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দর্শনা-খুলনা দ্বৈত রেলপথ বা ডাবল লাইন নির্মাণের জন্যে ডোনার বা দাতা খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু মিলছে না তা। তাই এ কাজে দেরি হচ্ছে। অন্তত ৭ থেকে ৮ বছর ধরে এমনটি হচ্ছে। কবে নাগাদ তা পাওয়া যাবে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কবে পাওয়া যাবে জানিনা। পাওয়া গেলে তো ভালো হতো। আমিও চাই দর্শনা-খুলনা রুটে ডাবল লাইন হোক। কিন্তু চাইলেই তো আর হয় না।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী ওয়ালিউল হক দৈনিক লোকসমাজকে বলেন, ১২৬ দশমিক ৫ কিলোমিটারের ডাবল লাইন নির্মাণের জন্যে কনসালট্রেডেড টেন্ডার হয়েছে। অর্থাৎ কনসালটেশন বা আলোচনার জন্যে টেন্ডার হয়েছে। অবশ্য নির্মাণ কাজ কোন পর্যায়ে তিনি তা জানাতে পারেননি। বলেন, একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে। আমরা মাঠ পর্যায়ের বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত না হলে তা আমাদের জানার কথা নয়।


রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৮৬২ সালে ১৫ নভেম্বর যাত্রা শুরু হওয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের ২০০৯ সাল পর্যন্ত আয়তন ছিল ৩ হাজার ৬শ কিলোমিটার। শুরুতে যা ছিল ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার। যাত্রার সময়ে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও কুষ্টিয়ার জগতীর ভেতর রেল সংযোগ ছিল। চাহিদার সাথে এর পরিধি বাড়ছে। তবে তা যেভাবে বাড়া উচিত ছিল তার চেয়ে স্লথ গতিতে। দর্শনা-খুলনা দ্বৈত রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রেও এমন হচ্ছে। সূত্র আরো জানায়, দর্শনা-খুলনা দ্বৈত রেলপথ নির্মাণের দাবিও দীর্ঘদিনের। কিন্তু এখনো তা বাস্তবতা পায়নি, রয়েছে পরিকল্পনা পর্যায়ে। করোনা ধাক্কায় তা আরো পিছিয়ে যায়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারও এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেন, করোনার কারণে দেশের অর্থনীতিতে চাপ পড়েছে। তাই নিজস্ব অর্থায়নে দর্শনা-খুলনা দ্বৈত রেলপথ নির্মাণ করা যাচ্ছে না। সে জন্যেই খোঁজা হচ্ছে ডোনার। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। অবশ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো একটু আগ বাড়িয়ে বলেছে, সরকারের সাথে কাজ করতে এখন বিদেশিরা আর আগের মতো আগ্রহী না। কারণ হিসেবে তারা গণতন্ত্রের প্রায়োগিক অনুপস্থিতির দিকে বেশি নজর দিচ্ছেন।
এদিকে দর্শনা-খুলনা দ্বৈত রেলপথ নির্মাণ করতে হলে তার প্রাকপ্রস্তুতি হিসেবে বেশকিছু কাজ করতে হবে। তার ভেতর রয়েছে কিছু কিছু স্থানে ব্যক্তি মালিকানার জমি অধিগ্রহণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। এ কাজগুলো করতেও অনেক সময় লাগবে। তাই দক্ষিণ-পশ্চিমের ট্রেনযাত্রীদের জন্যে দ্বৈত রেলপথ নিয়ে কোন সুখবর নেই।