পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত নিষিদ্ধ, রাশিয়ার হয়ে খেলতে পারবে না ফুটবলাররা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ইউক্রেনে হামলার পর থেকেই রাশিয়া এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে শান্তিকামী বিশ্ব। বিশেষ করে ক্রীড়াজগত তো কোনোভাবেই এই আগ্রাসন মেনে নিতে পারছে না। যে কারণে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নানা নিষেধাজ্ঞার খবর আসছিল। অনেকগুলো বড় প্রতিযোগিতাও সরিয়ে নেয়া হয়েছে রাশিয়া থেকে। পোল্যান্ড, ইংল্যান্ডসহ অনেকগুলো দেশ রাশিয়ার সঙ্গে খেলবে না বলে জানিয়ে দেয়ার পর বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব নিয়ে বিপাকে পড়ে যায় ফিফা। শেষ পর্যন্ত ফুটবলের অভিভাবক সংস্থাটি সিদ্ধান্ত নিল, ফুটবল ম্যাচে রাশিয়ার পতাকা প্রদর্শন কিংবা তাদের জাতীয় সঙ্গীত নিষিদ্ধ। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার ব্যানারে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে অংশ নিতে পারবে না দেশটির ফুটবলাররা। ফিফা জানিয়ে দিয়েছে, ফুটবল ইউনিয়ন অব রাশিয়া- এই ব্যানারে তারা বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অংশ নিতে পারবেন। যদিও ইংল্যান্ড সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনোভাবেই রাশিয়ার সঙ্গে আর কোনো ফুটবল ম্যাচ খেলবে না। ফিফা থেকে পুতিনের দেশকে বহিস্কার না করলেও ভিন্নভাবে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। নিজেদের নাম ও জাতীয় সঙ্গীত এবং পতাকাছাড়া নিরপেক্ষ ভেন্যুতে নিজেদের ম্যাচ খেলার নির্দেশ দিয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সুতরাং রাশিয়ান ফুটবল দল তাদের ফেডারশনের নাম নিয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে। যা অনেকটা অলিম্পিক্সের মতোই। যেখানে কোর্ট অফ অ্যারবিট্রেশনের ধার্য করা নিয়মের মেনে। রাষ্ট্রের অনুদানে ডোপিং করার কারণে অলিম্পিক অলিম্পিক্স কমিটির নাম নিয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয় রাশিয়াকে। ফিফার পক্ষ থেকেও এক্ষেত্রে একই নিয়ম অবলম্বন করা হয়েছে। ফিফার পক্ষ থেকে আজ এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘সদস্য দেশ হিসেবে রাশিয়া ফুটবল টুর্নামেন্টগুলোতে অংশ নিতে পারবে। তবে অংশ নিতে হবে ফুটবল ইউনিয়ন অব রাশিয়া (আরএফইউ) নামে, শুধুমাত্র রাশিয়া নামে নয়।’ তবে ফিফার এ সিদ্ধান্ত মানতে পারেনি অনেকেই। কিন্তু অনেক দেশই চায় ফিফা রাশিয়াকে বহিষ্কার করুক। ইংল্যান্ড তো জানিয়েই দিয়েছে, তারা রাশিয়ার সঙ্গে আর কখনও খেলতে চায় না। সোমবারই ইংলিশ এফএ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনোরকম প্রতিযোগিতাতেই অংশ নেবে না তারা। ফলে যোগ্যতা অর্জন করলেও, ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আসন্ন নারী ইউরোতে রাশিয়ার অংশগ্রহণ করা নিয় ঘোর সংশয় তৈরি হয়েছে। অপরদিকে, ফ্রান্স ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নোয়েল লে গ্রান্টও জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়াকে বিশ্বকাপে সুযোগ না দেওয়ার পক্ষে থাকবেন। শুধু তাই নয়, পুরুষদের বিশ্বকাপে বাছাই পর্বের লড়াইয়ে রাশিয়ার মুখোমুখি হওয়ার কথা পোল্যান্ডের। তাদের মধ্যে জয়ী দল আবার চেক প্রজাতন্ত্র ও সুইডেনের মধ্যেকার ম্যাচের জয়ী দলের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপে বাছাইপর্বের শেষ ধাপের ফাইনালে ম্যাচ আয়োজন করবে। কিন্তু বাকি তিন দলই জানিয়ে দিয়েছে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে ইচ্ছুক নন। এর জন্য এই তিন ফেডারশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই পারে ফিফা। কিন্তু ১৯৯২ সালের ইউরোতেও এই যুদ্ধের জেরেই ইউরো থেকে যুগোস্লাভিয়াকে বহিষ্কারত করেছিল উয়ফো। ফিফা তাই বিশ্বকাপে রাশিয়ার অংশগ্রহণ বাতিল করতেই পারে। বর্তমানে যা চাপের মুখে পড়েছে তারা, তাতে এর অন্য়থা কিছু করাও বেশ কঠিন।