ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে: ড. আব্দুর রব

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেছেন, আমাদের ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। বাংলা ভাষা নিয়ে যুবসমাজকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে সম্ভাবনার বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলা ভাষার গৌরবময় ইতিহাস জাতীয় মুক্তির পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আব্দুর রব বলেন, মাতৃভাষা মানুষের জন্মগত অধিকার। মানুষ যে দেশে জন্ম নেয় সে দেশের ভাষাই তার মাতৃভাষা। জন্মগতভাবে আমরা বাংলাদেশি তাই বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এ ভাষার ইতিহাস ও আন্দোলন অত্যন্ত দীর্ঘ। বাংলাভাষা চর্চা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিজ সন্তানদের বাংলা ভাষা ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রচলনের জন্য যারা কাজ করছেন তাদের পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা করা উচিত। সঙ্গে বিদেশি অপসংস্কৃতির হাত থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে হবে এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছিল। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের ওই অঙ্গীকার থেকে দূরে সরে এসে বাংলা ভাষাকে লাঞ্ছিত করা যাবে না। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়- এ সত্যটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। ভাষা মানুষের বিচ্ছিন্নতা দূর করে, পরস্পরকে ঐক্যবদ্ধ করে। কাজেই দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে বাংলা ভাষা চর্চাকে বিকশিত ও উন্নত করাই হবে আমাদের অন্যতম কর্তব্য। সেমিনারে প্রবন্ধকার ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মান্নান বলেন, উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ। ভাষা আন্দোলনে যেমন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি আদায় করেছিল, তেমনি আজ দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা ও ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠায় সবাইকে দল-মত ও শ্রেণি-পেশার ঊর্ধ্বে উঠে ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তাহলেই এজাতীর মুক্তি সম্ভব। সেমিনারে দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, কবি মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।