অভয়নগরে মেম্বার উত্তম সরকার হত্যায় আটক ৩ চরমপন্থির কোর্টে স্বীকারোক্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার উত্তম সরকার হত্যাকা-ে জড়িত অভিযোগে আটক বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেটসহ ৩ কথিত চরমপন্থি মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মারুফ আহমেদ তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
এদিকে উত্তম সরকার হত্যার ঘটনায় আরো কিছু তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ। সংস্থাটি বলছে, হত্যা মিশনে ৩ জন নয়, ৫ জন ছিলেন। তাদেরকেও আটক করা গেলে হত্যার বিষয়ে আরো তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মো. শামীম হোসেন জানান, উত্তম সরকার হত্যার ঘটনায় আটক কথিত নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল, বিজন কুমার মন্ডল ওরফে বিনোদ, প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট, পল্লব বিশ্বাস ওরফে সুদীপ্ত ও প্রশান্ত মন্ডলকে গত ১৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। মঙ্গলবার তাদের রিমান্ড শেষ হওয়ায় আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় ৫ জনের মধ্যে ৩ জন অর্থাৎ প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট, ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল ও বিজন কুমার মন্ডল ওরফে বিনোদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে ওই তিনজনসহ ৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালতের বিচারক। তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আটক ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েলের কাছ থেকে হত্যার বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল তাদেরকে জানিয়েছেন যে, হত্যা মিশনে ৩ জন নয়, তারা ৫ জন ছিলেন। এদের মধ্যে দু’জনকে তিনি চেনেন না।
এসআই মো. শামীম হোসেন জানান, উত্তম সরকার তাকে নির্বাচনে জিতিয়ে দিতে কথিত চরমপন্থি নেতা কিরনকে ১ লাখ টাকা চাঁদা দিতে চেয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে উত্তম সরকার এ জন্য ১ লাখের মধ্যে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। নির্বাচনের পর বাকি ৭৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি গত ১০ জানুয়ারি ঘটনার দিন ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে ওই টাকা নেয়নি কিরনের পাঠানো কথিত চরমপন্থিরা। খুন হয়ে যাওয়ার পর উত্তম সরকারের কাছে সেই ৩০ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিলো। তিনি বলেন, কথিত চরমপন্থিদের স্থানীয় তথ্যদাতা প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট। তিনি গোপনে যাদের টাকা আছে তাদের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে কিরনের কাছে সরবরাহ করে থাকেন। আর কিরন ওইসব নম্বরের মালিকদের মোবাইল ফোন করে চাঁদা দাবি ও হুমকি দিয়ে থাকেন। আটক প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট নিজেকে সুন্দলী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দাবি করেন। তবে উত্তম সরকার হত্যার ঘটনায় তিনি আটক হওয়ায় সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, গত ১০ জানুয়ারি রাতে অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের হরিশংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়ির কাছে দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন ১ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার উত্তম সরকার। ডিবি পুলিশ ও অভয়নগর থানার পুলিশ এ ঘটনায় মোট ৬ জনকে আটক করেছে।