বাগেরহাটে খানজাহান আলীর বসতভিটা খননে মিলছে সাড়ে ৬শ বছরের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন

0

আলী আকবর টুটুল, বাগেরহাট ॥ ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদের অদূরে খানজাহান আলীর (রহ.) বসতভিটা খননের পর বেরিয়ে আসছে সাড়ে ৬শ বছর আগের নানা প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন। নিদর্শনগুলো দেখতে ভিড় করছেন শিক্ষার্থীসহ নানা বয়সী মানুষ। সুলতানি আমলে এই এলাকার ভূমির স্তরবিন্যাস, স্থাপত্যশৈলী ও কালানুক্রমিক সময় বের করাই এই খননের মূল উদ্দেশ্য বলে জানিয়েছে প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর। খানজাহান আলীর (রহ.) বসতভিটায় প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর খননকাজ শুরু করার ১০ দিনের মাথায় গত রবিবার মিলল বিভিন্ন নিদর্শন। বসতভিটার নিচে প্রাচীন আমলের মেঝে, ইটের দেওয়ালসহ সুলতানি আমলে ব্যবহৃত নানা ধরনের তৈজষপত্র পাওয়া যায়। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৮৫ সালে খানজাহান আলীর (রহ) নির্মিত ষাটগম্বুজ মসজিদসহ ১৭টি স্থাপনাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।
এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা এলাকায় অবস্থিত খানজাহান আলীর (রহ.) বসত ভিটা অন্যতম। বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হওয়ার পরেও দীর্ঘদিন ধরে খানজাহান আলীর (রহ.) এই বসতভিটা অবহেলিত ছিল। স্থানীয়দের গো-চারণভূমিতে পরিণত হয়েছিল বসতভিটার ঢিবিগুলো। ২০০০ সালের পরে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর এই বসতভিটাকে প্রত্মতাত্ত্বিক গুরুত্ব নির্ণয়ের জন্য কয়েক দফায় খনন করে। সেখানে টিন শেডের একটি কার্যালয় তৈরি করে তারা। এর ধারাবাহিকতায় প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতার নেতৃত্বে আবারও খননকাজ শুরু হয়েছে। সাতজন কর্মকর্তা ও অনিয়মিত ১৪ জন শ্রমিক এই খননকাজ ও গবেষণায় অংশগ্রহণ করছেন। ৩১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া খননকাজে ইতোমধ্যে মাটির নিচে ইটের দেওয়াল, সিমেন্ট ও বালুর তৈরি মেঝে, সুলতানি আমলে ব্যবহৃত মাটির তৈরি পানির পাত্র, মাটির ঢাকনাসহ নানা তৈজসপত্রসহ প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাঠ পরিদর্শক আল আমিন বলেন, ৩১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া আমাদের এই খননকাজ ৩১ জানুয়ারি শেষ হবে। এরপরেও এই বসতভিটা নিয়ে আমাদের গবেষণা চলমান থাকবে। বাগেরহাটের প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টোডিয়ান মো. যায়েদ বলেন, আমাদের খনন কাজের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূমির স্তর বিন্যাস, স্থাপত্য শৈলী ও কালানুক্রমিক সময় বের করা। খননের মাধ্যমে পাওয়া স্থাপনা, ইট ও তৈজসপত্রসহ নানা তথ্য উপাত্ত নিয়ে আমরা গবেষণা করব। এছাড়া খননের মাধ্যমে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে রেজিস্ট্রেশন করা হবে। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের নির্দেশে এসব প্রতœবস্তু যাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।